নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে মোটরসাইকেল বিক্রয়কারী কোম্পানি হোন্ডার কনসার্টে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। কনসার্ট শেষ করতে চাইলে এক পক্ষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। স্লোগানের পর সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় সেন্টারের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। লাটিচার্জ করে ভাঙচুরকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট–পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে জিইসি মোড়ের পাশের ডেবার পাড় এলাকার মো. শরীফ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
শরীফকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যুবক মো. নাঈম বলেন, কনসার্ট চলাকালে একটি পক্ষ সেখানে জয় বাংলা স্লোগান দেয়। এ নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করেন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে বাক্বিতণ্ডা ও সংঘর্ষ শুরু হয়।
একটি সূত্রে জানা গেছে, কনসার্ট শুরু হয় গতকাল সকাল ১০টায়। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার সময় ঢাকা থেকে আসা ব্যান্ড দল গান শুরু করে। রাত সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠান শেষ করতে চাইলে বাঁধে গণ্ডগোল। উঠতি বয়সের তরুণরা রাতভর গান শোনার আবদার করে। এর মধ্যে ব্যান্ড দল তাদের জিনিসপত্র গুছানোর উদ্যোগ নিলে অনুষ্ঠানস্থলে থাকা তরুণরা চিৎকার শুরু করে এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। এতে অপর একটি পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে অনুষ্ঠানস্থলের ভেতরে–বাইরে ভাঙচুর করে।
জিইসি কনভেনশন সেন্টার কর্তৃপক্ষ জানান, প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে হোন্ডা একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে আসা ব্যান্ড দল গান শুরু করে। রাত সোয়া ৯টায় অনুষ্ঠান বন্ধ করতে চাইলে তরুণরা আরো গান শোনার দাবি জানায়। আয়োজকরা অনুষ্ঠান বন্ধ করে চলে যেতে চাইলে ঝামেলা বাঁধে।
গতকাল ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পক্ষ কনভেনশন সেন্টারের মূল ফটক ভাঙচুর করার চেষ্টা করছে। এ সময় ভেতরে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়েন। ভিডিওটিতে দেখা যায়, শটগান থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে কনভেনশন সেন্টারের গেটের দিকে এগিয়ে যান সাদা পোশাকের এক ব্যক্তি। তার পেছনে ছিলেন পুলিশের সদস্যরা।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক আজাদীকে বলেন, জিইসি থেকে দুজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অপরজন অন্যভাবে আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ যুবক গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হলেও তেমন ঝুঁকি নেই বলে জানান তিনি।
খুলশী থানার ওসি (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, জিইসি কনভেনশনে হোন্ডা কোম্পানির একটি ওয়ার্কশপ ছিল। কিন্তু কনসার্টের কোনো অনুমতি ছিল না। কনসার্ট করতে গিয়ে ঝামেলা বাঁধে। গুলির বিষয়ে সঠিক জানেন না জানিয়ে তিনি বলেন, তবে শুনেছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, কী নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে সেটি জানার চেষ্টা করছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে। কনসার্ট আয়োজনের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথেও কথা হচ্ছে।