চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

| শনিবার , ১১ অক্টোবর, ২০২৫ at ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এমেরিটাস অধ্যাপক ও সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টায় তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির পরিচালক কবি সরকার আমিন ও অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম।

ল্যাবএইড হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফারুক আহমেদ বিকাল সাড়ে ৫টায় বলেন, তিনি একটু আগে এক্সপায়ার করেছেন। মাজহারুল ইসলাম জানান, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ আজ শনিবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। খবর বিডিনিউজের।

এদিন সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছিলেন প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। তিনি দুপুরে বলেছিলেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতির কারণে তাকে সকালে আবারও লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। স্যারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। স্যারের অবস্থা এখন একটু ক্রিটিক্যাল, ফলে তাকে আবারও লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের অবস্থায় নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম গত ৩ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হলে নেওয়া হয় ল্যাবএইড হাসপাতালে। সেখানে ভর্তির পর পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে রাতেই তার হার্টে দুটি রিং পরানো হয়। রোববার সন্ধ্যায় অবস্থা সংকটাপন্ন হলে সৈয়দ মনজুরুলকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছিলেন তিনি।

অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্ম ১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে। তার বাবার নাম সৈয়দ আমীরুল ইসলাম, মা রাবেয়া খাতুন। সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পাস করেন তিনি; সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়েটসের কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব বিষয়ে পিএইচডি করেন।

পেশাগত জীবনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অবসরের পর যোগ দেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক পান। তার বইয়ের মধ্যে রয়েছে পুস্তক প্রকাশনা ও সম্পাদনা প্রসঙ্গ, থাকা না থাকার গল্প, কাচ ভাঙ্গা রাতের গল্প, অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প, আধখানা মানুষ্য, দিনরাত্রিগুলি, আজগুবি রাত, তিন পর্বের জীবন, নন্দনতত্ত্ব, কতিপয় প্রবন্ধ, অলস দিনের হাওয়া।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরীর ভাঙা সড়কে কার্পেটিং কাজ পরিদর্শনে মেয়র
পরবর্তী নিবন্ধজুম্ম নারীরা শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়নের শিকার