গুমের অভিযোগ আমলে, হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

| বৃহস্পতিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধী মতের লোকদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় প্রসিকিউশনের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল১ গতকাল বুধবার অভিযোগ আমলে নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক হলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। খবর বিডিনিউজ ও বাসসের।

ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মো. তাজুল ইসলাম এদিন দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে তা আমলে নেওয়ার এবং আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। এর মধ্যে র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মামলায় ১৭ জন এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) বন্দি রেখে নির্যাতনের মামলায় ১৩ জন আসামি।

দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়। ট্রাইব্যুনাল যথারীতি অভিযোগ আমলে নিয়ে ৩০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে। এ দুই মামলার পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে ২২ অক্টোবর।

বিশেষ বন্দীদের কোড নেইম : শেখ হাসিনার শাসন আমলে গুমের শিকার বন্দীদের আলাদা ‘কোড নেইম’ ছিল। বিশেষ বন্দীদের ডাকা হতো ‘মোনালিসা’ নামে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল১ এ তুলে ধরলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এদিন এক পর্যায়ে চিফ প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনালকে বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তির হাত কেটে ফেলা, নখ উপড়ে ফেলা, ঘুর্ণায়মান চেয়ারে বসিয়ে কিংবা ইলেকট্রনিক শক দিয়ে লোমহর্ষক সব নির্যাতন করা হতো।

এছাড়া গুমের শিকার বন্দীদের আলাদা কোড নেইম ছিল। বিশেষ বন্দীদের ডাকা হতো মোনালিসা নামে। আর গুম ঘরকে বলা হতো আর্ট গ্যালারি, যা পরবর্তীতে আয়না ঘর হিসেবে পরিচিতি পায়। অন্যদিকে, গোপন বন্দীশালা গুলোকে ‘হাসপাতাল’ বা ‘ক্লিনিক’ নামে ডাকা হতো। আর গুমের শিকার ভুক্তভোগীদের বলা হতো ‘সাবজেক্ট’।

প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাইআগস্টে ছাত্রজনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। এখন দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে ৮ লাখ ২৯ হাজার শিশুকে দেওয়া হবে টাইফয়েড টিকা : মেয়র
পরবর্তী নিবন্ধহাকিম কি বিএনপির কর্মী ছিলেন স্থানীয়রা কে, কী বলছেন