বান্দরবানে মারমা সমপ্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে (প্রবারণা) উৎসবে মেতেছে মারমা সমপ্রদায়েরা। গতকাল সোমবার সকালে বান্দরবান শহরের রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় প্রার্থনার পর বুদ্ধমূর্তিতে মঙ্গলজল ছিটানো, ভিক্ষুদের মিষ্টান্ন খাবার প্রদান, প্রণাম করাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা সম্পন্ন করেছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সমপ্রদায়ের নারী–পুরুষেরা। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বান্দরবান বোমাং সার্কেল চিফ রাজা ইঞ্জিনিয়ার উচপ্রু চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সন্ধ্যায় স্থানীয় পুরাতন রাজবাড়ি মাঠ থেকে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবের মূল আকর্ষণ অমঙ্গল দমনকারী ড্রাগন আকৃতির আদলে তৈরি করা মঙ্গলরথে বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করে রথটি ঐতিহ্যবাহী রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে অবস্থানরত আসাংম্রাইকে (গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করে) বন্দনা করার উদ্দেশ্যে রশি দিয়ে টেনে টেনে নেয়া হয়। পরে সেখানে বন্দনা শেষে উজানী পাড়া বৌদ্ধ বিহারে অবস্থানরত পদমুং আসাংকে বন্দনা করার উদ্দেশ্যে টেনে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় বৌদ্ধ ধর্মের নর–নারীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বুদ্ধ মূর্তিকে। এ রথযাত্রা দেখতে রাস্তার দুই পাশে উপচেপড়া ভিড় জমে। উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি চনুমং মারমা বলেন, এবারের মঙ্গল রথটি তৈরি করা হয়েছে সকল অমঙ্গল দমনে দেবতা ড্রাগনের আদলে। এ উৎসবের মাধ্যমে মঙ্গল বয়ে আনুক পার্বত্য চট্টগ্রামসহ গোটা বাংলাদেশে এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের। মঙ্গলবার রাতে মঙ্গল রথ সাঙ্গু নদীতে বিসর্জনের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানমালা শেষ হবে। তবে এ উৎসব পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলবে আরো কয়েকদিন। জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ্ কাওছার বলেন, মারমা সমপ্রদায়ের উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। উৎসবকে ঘিরে আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।