বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনে যে সরকারই ক্ষমতায় আসবে, তার সঙ্গে ভারত সরকার কাজ করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। গতকাল সোমবার সকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিক্রম মিশ্রি বলেন, যদি কারও মনে ন্যূনতম সন্দেহ থেকে থাকে, সেজন্য আমি এ বিষয়ে খুবই স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে ভারত এবং যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পক্ষে। নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার যে বক্তব্য দিয়েছে, আমরা তাতে উৎসাহিত এবং আমরা প্রতীক্ষায় আছি, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবং আমরা আশা করি কোন বিলম্ব না ছাড়াই তা হবে। এবং সে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই আসুক না কেন, আমরা তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার প্রতীক্ষা আছি। খবর বিডিনিউজের।
অবশ্য, এটা হবে এমন সরকার, যারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসবে এবং বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যে সরকারকেই বাছাই করবে, আমরা তার সঙ্গে কাজ করব।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা তার মধ্যে যেতে চাই না। আমি মনে করি, বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের নাগরিক সমাজই দেখবে, এই নির্বাচনকে কীভাবে তারা মূল্যায়ন করবে এবং বাইরের লোকজনও দেখবে।
আমি শুধু এভাবে বলতে পারি, এটা কেবল অভ্যন্তরীণ বৈধতার প্রশ্ন নয়, বহির্বিশ্বের বৈধতার প্রশ্নও। সুতরাং, সেদিক থেকে এটাও একটা দিক এবং নির্বাচনটা নিয়ে কী ভাবা হয়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কেবল আক্ষরিক অর্থ বিবেচনায় নিয়ে বলছি অবাধ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ওই প্রক্রিয়ার অংশ, যেই প্রক্রিয়া এটাকে বৈধতা দেয়। ভোটের বৈধতার প্রশ্নও জনগণের উপর ছেড়ে দেওয়ার দাবি করে তিনি বলেন, দিনশেষে বাংলাদেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেবে এবং সেটাকে কীভাবে অনুষ্ঠিত হয়। কেননা, এই সিদ্ধান্তগুলো কেবল এই বছর ও এখনকার জন্য না, বরং মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে অনেক দূর যাবে। এবং সবশেষে বাংলাদেশের মানুষকেই এটা দেখতে হবে।
আওয়ামী লীগের মত বড় দলকে বাদ দিয়ে ভোট হলে সেই ভোটে আসা সরকারের সঙ্গেও ভারত কাজ করবে কি না, এমন প্রশ্নও করা হয় বিক্রম মিশ্রিকে। উত্তরে তিনি বলেন, আমি বলতে পারি, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যে সরকারই আসুক, আমরা তার সঙ্গে কাজ করব।