আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার (এফআইডিএইচ) সভাপতি অ্যালিস মোগওয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
মোগওয়েকে সফরের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা দেশের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, গত মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের পার্শ্ব বৈঠকে আমি অনেক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করেছি। আমি তাদের সবাইকে বাংলাদেশে আসার আহ্বান জানিয়েছি, কারণ আমাদের দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি সফর উপেক্ষিত বিষয়গুলো সামনে আনে এবং আমাদের তা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাজায় চলমান মানবিক সংকট ছিল বৈঠকের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। মোগওয়ে গাজার জনগণের প্রতি এফআইডিএইচে চলমান সহায়তার উদ্যোগ তুলে ধরেন এবং প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ় সংহতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আপনারা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও অসাধারণ কাজ করছেন। বাংলাদেশে গত ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের প্রসঙ্গ ধরে মোগওয়ে গুম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, তরুণরা পরিবর্তনের প্রতি প্রবল তৃষ্ণা দেখাচ্ছে। আমি প্রতিদিন সকালে প্রার্থনায় বাংলাদেশকে স্মরণ করি।
আইসেসকোর মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ : একই দিনে ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশনের (আইসেসকো) মহাপরিচালক সেলিম এম আল মালিকও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আল মালিক বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস ও তার বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগগুলোর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, আমি যখন চিকিৎসা শাস্ত্রের ছাত্র ছিলাম, তখনই প্রথম আপনার এবং গ্রামীণ ব্যাংকের কথা শুনেছিলাম। আপনার থ্রি জিরো তত্ত্ব তখন সর্বত্র আলোচিত ছিল। ব্যাংকিং থেকে শুরু করে ক্রীড়া ও পরিবেশ পর্যন্ত। এটি সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল।
আইসেসকোর মহাপরিচালক প্রধান উপদেষ্টার সংস্কারমূলক কর্মসূচি ও অন্তর্বর্তী সরকারের রূপান্তরমুখী দর্শনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানান। তিনি আইসেসকোর যুব, শিক্ষা ও পরিবেশ বিষয়ক কৌশলগত কাঠামোর অংশ হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের থ্রি জিরো অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি চান। তিনি বলেন, আমরা দেশগুলোকে খাদ্য অপচয় ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়তা করছি। ব্রুনেই, আলজেরিয়া ও নাইজেরিয়ার মতো দেশ ইতিমধ্যে আমাদের উদ্যোগগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় রূপান্তর করে উপকৃত হয়েছে।
ইউনূস শিক্ষা ও টেকসই উন্নয়নে আইসেসকোর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং যুবশক্তিকে সক্ষম করা ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে উদ্ভাবনী সামাজিক ব্যবসা সম্প্রসারণে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।