বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে প্রথমবারের মত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করল মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব, যা বাংলাদেশের শ্রম বাজারের সমপ্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে ১৯৭৬ সাল থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে কর্মী নিয়োগ শুরু হলেও সাধারণ কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না। কেবল ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই সংক্রান্ত দুটি বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য। খবর বিডিনিউজের।
নতুন এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মী ও নিয়োগকর্তার অধিকার ও স্বার্থ ‘অধিকতর সুরক্ষিত’ হবে বলে আশা করছে সরকার। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সোমবার সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরবের পক্ষে মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী আহমেদ বিন সোলাইমান আল–রাজী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি ‘ভ্রাতৃপ্রতিম উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে’ বলে আশা করছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে সৌদি আরবে বিদেশিদের কর্মসংস্থানের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। সরকারি হিসেবে ৩০ লাখের বেশি বাংলাদেশি বর্তমানে সৌদি আরবের বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। তবে বৈধ অবৈধ মিলিয়ে এই সংখ্যা ৩৫ লাখের মত বলে ধারণা করা হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সৌদি মন্ত্রী ও উপদেষ্টার মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সৌদি আরবে নিয়োগ চুক্তি যেন সঠিক হয়, ইকামা (ওয়ার্ক পারমিট) নবায়নের দায়িত্ব যেন নিয়োগকর্তা পালন করে এবং দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা যেন স্বল্প সময়ে এঙিট ভিসা পান–সেসব বিষয় তুলে ধরেন। সৌদি মন্ত্রী এসব বিষয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন এবং বাংলাদেশকেও নিরাপদ ও সুষ্ঠু অভিবাসন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য।