চট্টগ্রামের যে কয়জন ক্রীড়া সংগঠক নিজ জেলার গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম মনজুর আলম মনজু। প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় তিনি ঢাকার ক্রীড়াঙ্গন এবং জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়াঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় টানা দ্বিতীয়বারের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক নির্বাচিত হলেন। ২০২১ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মত বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছিলেন মনজু। এবারের ঘটনা বহুল নির্বাচনে ঢাকার ক্লাব ক্যাটাগরিতে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন মনজু। এই ক্যাটাগরি থেকে ১২ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। এই ক্যাটাগরিতে মোট ভোটার ছিলেন ৭৬ জন। তবে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৪২ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে ৩৪ জন ই–ভোটের মাধ্যমে আর ৯ জন সশরীরে উপস্থিত থেকে ভোট দিয়েছেন। বাকী ৩৩ জন ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকেন। এই ৪২ ভোটের মধ্যে মনজুর আলম পেয়েছেন ৩৯ ভোট। এবারের নির্বাচনে মনজুর আলম রেগুলার স্পোর্টিং ক্লাবের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। দেশে পট পরিবর্তনের পর প্রথমে ফারুক আহমেদ এবং পরে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট বোর্ডের কমিটিতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন মনজুর আলম। মেডিকেল কমিটির চেয়ারম্যান, ওয়েলফেযার কমিটির চেয়ারম্যান এবং সিকিউরিটি কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন মনজু। তাঁর দায়িত্বশীলতার ফল পেলেন মনজু এবারের বিসিবির নির্বাচনে। কিন্তু মনজুর আলম আস্থা রেখেছিলেন কাউন্সিলরদের ওপর। সে আস্থার প্রতিদান তারা পেয়েছেন কাউন্সিলরদের কাছ থেকে। এবারের দ্বিতীয়বারের মত বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হলেও ২০১৪ সাল থেকে তিনি বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ছাড়াও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন মনজু। ছিলেন ন্যাশনাল টিমস কমিটির সদস্য, বাফুফে মহিলা উইংসের সদস্য। এছাড়া দীর্ঘ সময় ঢাকা মোহামেডানের পরিচালক ছিলেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ক্লাবটির ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে। বর্তমানে ঢাকা মোহামেডানের হকি কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মনজু। এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম মোহামেডানের সহসভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। ফুটবল এবং ক্রিকেটের নানা ইভেন্টে বিদেশেও বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সুনামের সাথে।
এদিকে প্রথমবারের মত বিসিবি পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রামের আরেক ক্রীড়া সংগঠক আহসান ইকবাল চৌধুরী আবীর। অনেকটা নাটকীয়ভাবে এবারের বিসিবি নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। ক্যাটাগরি–১ এ চট্টগ্রাম বিভাগের দুই পরিচালক পদের জন্য প্রার্থী ছিলেন তিনজন। সেখান থেকে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর মীর হেলাল উদ্দিন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবীর এবং কুমিল্লা জেলার কাউন্সিলর আসিফ আকবর বোর্ড পরিচালক নির্বাচিত হন। এর আগে অবশ্য চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে কাউন্সিলর হিসেবে পাঠানো হয়েছিল ইস্রাফিল খসরুকে। কিন্তু তিনি বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য না হওয়ায় ইস্রাফিল খসরুর কাউন্সিলরশিপ গৃহীত হয়নি। ফলে অ্যাডহক কমিটির সদস্য হিসেবে আহসান ইকবাল চৌধুরী আবীরের নাম পাঠানো হয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর হিসেবে। আর শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচিত হন বিসিবির পরিচালক। প্রথমবারই কাউন্সিলর এবং প্রথমবারই পরিচালক চট্টগ্রামের এই ক্রীড়া সংগঠক।
এদিকে আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনজুর আলম মনজু দ্বিতীয়বারের মতো বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় আনজুমান ট্রাস্ট, গাউসিয়া কমিটি ও সর্বস্তরের পীর ভাই–বোনদের পক্ষ হতে অভিনন্দন জানানো হয়। তাঁর এ সফলতায় অভিনন্দন জানান ট্রাস্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কিউ আই চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আমির হোসেন সোহেল, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সামশুদ্দীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এস এম গিয়াস উদ্দীন (শাকের), ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ কমর উদ্দীন (সবুর), প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দীন, কেবিনেট সদস্য পেয়ার মোহাম্মদ, মোহাম্মদ হোসেন খোকন, আনজুমান নির্বাহী সদস্যবৃন্দ, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের পক্ষে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, মাহমুদ নেওয়াজ, আশফাক আহমেদ, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, আনোয়ার সাদাত প্রমুখ।