অনুমতি ছাড়া সাইনবোর্ড, পোস্টার ব্যানার লাগালে ব্যবস্থা : মেয়র

৮০ শতাংশ কোচিং সেন্টার অনুমতি ছাড়া লাগায় সপ্তাহব্যাপী চসিকের উচ্ছেদ কর্মসূচি শুরু

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৬ অক্টোবর, ২০২৫ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

নগরের ৮০ শতাংশ কোচিং সেন্টার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কোনো অনুমতি ছাড়াই পোস্টারব্যানার লাগায় বলে জানিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এতে নগরের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনুমতি না নেয়ায় সিটি কর্পোরেশন বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। অথচ একটি ব্যানারের জন্য মাত্র একদুই হাজার টাকা কর দিলেই যথেষ্ট। সেই অর্থ দিয়েই কর্পোরেশন শহরকে পরিষ্কার ও সবুজ রাখতে কাজ করে। এসময় ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সাইনবোর্ড, পোস্টার ও ব্যানার টাঙ্গানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

চসিকের উদ্যোগে গতকাল দুপুরে নগরের কাজীর দেউড়ি, চেরাগী পাহাড়, আন্দরকিল্লা, লালদীঘি, চকবাজারসহ নগরের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, সাইনবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মেয়র। এ সময় দূর্গাপুজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা দিয়ে লাগানো নিজের ছবি সম্বলিত ব্যানারও নিজ হাতে উচ্ছেদ করেন তিনি। এসময় মেয়র বলেন, সপ্তাহ ব্যাপি কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। ৪১ ওয়ার্ডে যেখানে যেখানে অবৈধ ব্যানার লাগানো হয়েছে সব খুলে ফেলা হবে।

ডা. শাহাদাত বলেন, ক্লিন সিটি গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা চাই শহরকে সুন্দর রাখতে সবাই যেন সচেতন হয়। যারা অনুমতি ছাড়া ব্যানারপোস্টার টানাচ্ছে, তারা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলো সরিয়ে ফেলে। ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের পোস্টার, ব্যানার বা সাইনবোর্ড টানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, শহরের সৌন্দর্য রক্ষা করতে হলে নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি না নিয়ে কেউ যেন ব্যানারপোস্টার না লাগায়। যদি কেউ বিজ্ঞাপন দিতে চায়, তাহলে সেটা অনুমতি নিয়ে করবে। আমরা চাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার কিংবা ব্যক্তিগত ব্যবসা সবকিছুই আইনের আওতায় আসুক।

মেয়র বলেন, আমি নিজেই প্রতি মাসে অন্তত একবার মাঠে নামি এই ধরনের অভিযান পরিচালনার জন্য। কারণ, এই শহর আমাদের নিজের শহর। যদি আমরা নিজের শহরের প্রতি দায়িত্বশীল হই, তাহলে কেউই শহরকে নোংরা রাখতে পারবে না। ব্যানারের কারণে কত সুন্দর দৃশ্য ঢেকে গেছে, সবুজ গাছপালা রাস্তার সৌন্দর্য। এসব সরানোর পরই বোঝা যায় শহর কত সুন্দর হতে পারে।

তিনি বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান কোনো অনুমতি ছাড়াই অসংখ্য ব্যানার টানিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান অন্যদেরও উৎসাহিত করছে অবৈধভাবে ব্যানার টানাতে। আমরা চাই তারা যেন দ্রুত সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে আইন মেনে চলে।

ডা. শাহাদাত বলেন, পূজার সময় অনেকেই শুভেচ্ছা ব্যানার দিয়েছেন। সেগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পূজার পর এসব ব্যানার সরিয়ে ফেলতে হবে। আমরা প্রতিটি উৎসবকে সম্মান করি, তবে শহরের সৌন্দর্যের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, আমরা চাই চকবাজার জোনটিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমৃদ্ধ ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে পরিণত করতে। এজন্য যত্রতত্র ব্যানারপোস্টার বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সৌন্দর্য নষ্ট না হয় এবং ব্যবসায়ীরাও নিয়ম মেনে প্রচার করতে পারেন।

মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারবে না। নাগরিকদের সহযোগিতা ছাড়া নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের রাজস্ব দিয়ে রাস্তা, নালা, খাল পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করছি। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে, রাজস্ব দিতে হবে। তবেই শহর এগিয়ে যাবে।

এ সমময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমোহাম্মদ ইলিয়াছ
পরবর্তী নিবন্ধঅলি আহম্মদ