আফগানিস্তানে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ বন্ধের ৪৮ ঘণ্টা পর আবারও তা চালু হচ্ছে। কোনও ধরনের সতর্কতা ছাড়াই গত সোমবার রাত থেকে মোবাইল ফোন সেবা ও ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে তালেবান সরকার ব্যাপক নিন্দা–সমালোচনায় পড়ে।
৪৮ ঘণ্টার এই ব্ল্যাকআউটের ফলে আফগানিস্তানের ব্যবসা–বাণিজ্য কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। প্রভাব পড়ে ব্যাংক, ডাকঘর, বিমান চলাচল এবং বাজারের লেনদেনেও। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রদেশে এখন আবার ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ফিরতে শুরু করেছে। ইন্টারনেট নজরদারি সংস্থা নেটব্লক্স জানিয়েছে, লাইভ নেটওয়ার্ক ডাটায় ইন্টারনেট সংযোগ আংশিক ফিরে আসতে দেখা যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
তালেবান সরকার এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের কিছু প্রদেশে ‘অনৈতিকতা’ ঠেকানোর কথা বলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। এর কয়েকসপ্তাহ পরই সামপ্রতিক এই শাটডাউন আসে। তালেবান সরকারিভাবে এই ইন্টারনেট শাটডাউনের কোনও কারণ ব্যাখ্যা করেনি। নেটব্লক্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিল, আফগানিস্তান পূর্ণ ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের মধ্যে রয়েছে। তালেবান কর্তৃপক্ষ নৈতিকতার বিধিনিষেধ কার্যকরের অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে একাধিক নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। টেলিফোন সেবাও বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছিল তারা।
তবে গতকাল বুধবার আফগানিস্তানজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা ফের চালু হওয়ায় যেন প্রাণ ফিরে আসে। কেউ কেউ বলেন, এই আনন্দ ঈদের খুশির মতো।
আফগানিস্তানে তালেবানরা নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শরিয়া আইন অনুযায়ী নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা চালু করে আসছে। নারী ও মেয়েদের পড়াশুনা ও চাকরিও তারা বন্ধ করেছে। সর্বশেষ আফগানিস্তানের সঙ্গে বহির্বিশ্বের সংযোগের একমাত্র পথ ইন্টারনেটেও তালেবান হস্তক্ষেপ করে।
গত সোমবার ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জাতিসংঘ বলেছিল, এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান বাইরের বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এর ফলে আফগান জনগণ গুরুতর ক্ষতির শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।