বারইয়ারহাট থেকে রামগড় সড়কে দীর্ঘদিন উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে রয়েছে খাগড়াছড়ি রুটের দূরপাল্লার ও বিভিন্ন এলাকার যাত্রী সাধারণসহ সকল প্রকার যানবাহন। গত ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও চলতি বছরের শেষার্ধেও শেষ হয়নি কাজ। বিভিন্ন স্থানে অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে আছে ব্রিজ–কালভার্ট। সড়কের বিভিন্ন অংশে বেড়ে গেছে খানাখন্দ। এতে দুর্ভোগের শিকার সকল যাত্রীরা। আবার কাজ বন্ধ থাকায় সকলের মনে প্রশ্ন উন্নয়ন প্রকল্প কি অনিশ্চয়তার দিকে?
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারইয়াহাট থেকে পার্বত্যমুখী বয়ে যাওয়া সড়কটি রামগড় থেকে ‘বাংলাদেশ–ভারতের মৈত্রী সেতুর’ সাথে রুটটির ৩৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জুন মাসে। গত ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও এখনো অনেক এলাকায় পুরো সড়ক, কোথাও আধা, কোথাও ব্রিজ, কালভার্ট অর্ধনির্মিত হয়ে পড়ে আছে। ইতোমধ্যে আবার অনেক স্থানে খানাখন্দ ও গর্তে একাকার হয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের।
এ সড়কে চলাচলকারী ট্রাকচালক আব্দুর রশিদ (৪৪) বলেন, আমাকে প্রায়ই এই সড়ক দিয়ে গুইমারা ও খাগড়াছড়ি যেতে হয়। বারইয়ারহাটের পর গর্ত ও ভাঙাচোরা বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় বেশ ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পার হতে হয়। করের হাট রুটে নিয়মিত চলাচলকারী সিএনজি চালক আরাফাত হোসেন (৩৭) বলেন, এই রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে থেকেই আমরা কষ্ট করছি। আশা করেছিলাম– আর বেশিদিন কষ্ট করতে হবে না। কিন্তু এখন দেখছি কাজ যেভাবে বন্ধ হয়ে গেছে কখন শুরু হবে তাও বুঝতে পারছি না।
জানা গেছে, বারইয়ারহাট হেঁয়াকোরামগড় সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারের সম্বিলিত উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৫১৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে ৫৯৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ঋণ দেবে ভারত সরকার। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ২৪৯.২০ মিটারের ৯টি সেতু ও ১০৮ মিটারের ২৩টি কালভার্ট ও ৩৮ ফুট প্রস্থের ৩৮ কিলোমিটার সড়ক। এর আগে অন্য একটি প্রকল্পে বারইয়ারহাট–হেঁয়াকো রামগড় সড়কে ২৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে জাইকার অর্থায়নে রামগড় থেকে বারইয়ারহাট পর্যন্ত ১৬টি ব্রিজ ও কালভার্টের কাজ ও শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিপিসিএল। ব্রিজ ছাড়াও ব্রিজের পাশে ২০০ থেকে ৩০০ মিটার এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে তারা।
বর্তমান প্রকল্পটির অবশিষ্ট সড়ক ১৮ ফুট থেকে ৩৮ ফুটে রুপান্তরকরণ, ১৩৯ মিটারের ৯টি সেতু ও ১০৮ মিটারের ২৩ কালভার্ট রয়েছে। কিছু কালভার্ট হয়ে গেলেও অনেক সেতু ও কালভার্ট রয়ে গেছে। সব মিলিয়ে অর্ধেক কাজই যেন রয়ে গেছে এমনটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। আবার ৮ মাস যাবত কাজ বন্ধ থাকায় যেন অনিশ্চয়তায় রয়েছে উন্নয়ন।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন বলেন, কিছু অংশে বন বিভাগের সাথে কিছু জটিলতার দরুন সেখানে কাজ বন্ধ আছে। এর মধ্যে প্রকল্প মেয়াদ নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে অবশিষ্ট সকল কাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে আশা করছি।