চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণা জোরদার হচ্ছে। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ক্যাম্পাস ফাঁকা থাকায় প্রার্থীরা কৌশল পরিবর্তন করেছেন। তারা সরাসরি শহরমুখী হয়ে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের দ্বারে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে প্রার্থীদের নির্বাচনী তৎপরতা ক্যাম্পাস থেকে ছড়িয়ে পড়ছে নগরীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকায়।
গতকাল শনিবার শিবির সমর্থিত সমপ্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেল নগরীর ষোলশহর ও তার আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ চালায়। সেখানে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে নিজেদের ইশতেহার তুলে ধরেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি ক্যাম্পাসেও ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। প্রতিটি হলে হলে যাচ্ছেন। ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকায়ও নির্বাচন প্রচারণা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে ছাত্রদলসহ অন্যান্য প্যানেলও পিছিয়ে নেই। তারা প্যানেলসহ শহরমুখী না হলেও প্রার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে ক্যাম্পাসের আশেপাশে মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছেন। স্টেশন, ঝুপড়িসহ হলগুলোতে প্রার্থীরা নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা, শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, আধুনিক চিকিৎসা সেবা, টিএসসি নির্মাণ ও শিক্ষার্থীবান্ধব নানা কার্যক্রম বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, শহরে বসবাসরতদের একটি বড় অংশ অনার্স শেষ বর্ষ কিংবা মাস্টার্স পর্যায়ের। তারা অনেকে কোচিং সেন্টারে চাকরির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকেন। ফলে এ শিক্ষার্থীদের একটি বড় ভোট ব্যাংক গড়ে উঠেছে। প্রার্থীরা তাই শহরে গিয়ে সরাসরি প্রচারণার মাধ্যমে তাদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছেন। শিক্ষার্থীদের অনেকে মনে করছেন, ক্যাম্পাস ফাঁকা থাকলেও শহরে প্রচারণা কার্যকরভাবে ভোট নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, ছুটির কারণে ফাঁকা ক্যাম্পাসে প্রচারণা সীমিত হলেও শহরে মেস ও আবাসস্থলে যাওয়া একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। বিশেষ করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমনভাবে সময় কাটান না কিন্তু ভোটার হিসেবে প্রভাব রাখবেন–তাদের কাছে পৌঁছাতে এই প্রচারণা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের প্যানেলের জিএস প্রার্থী সাফায়াত জানান, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী তেমন ক্যাম্পাসে নাই। যারা আছে তাদের হয়তো পরীক্ষার চাপ বা টিউশন আছে। আমরা তাদের কাছে যাচ্ছি আমাদের প্রচারণা চালাচ্ছি। শহর কেন্দ্রিক কোন প্রচারণা হবে কিনা জানতে চাইলে জানান, আমরা এখনও এমন কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। তবে আমরা শীঘ্রই শহরেও প্রচার প্রচারণা চালাবো।
শিবির প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম রনি জানান, এখন তো বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীরা সবাই বাড়িতে। তবে যারা আছে তাদের কাছে আমাদের প্রচারণা করতে চেষ্টা করছি।
চাকসু নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে শহর ও ক্যাম্পাস মিলিয়ে প্রচারণা আরও সরব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছুটি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরলে প্রচারণা কার্যক্রম দ্বিগুণ গতিতে চলবে এবং তখন পুরো বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনী উচ্ছ্বাসে মুখর হয়ে উঠবে।