জনগণ যদি নির্বাচনের মাঠে নেমে যায়, তাহলে কেউ আটকাতে পারবে না

চট্টগ্রামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আ. লীগের নেতাকর্মীরা যাতে সহজে জামিন না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩০ পূর্বাহ্ণ

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যাতে সহজে জামিন না পান, সে ব্যাপারে লক্ষ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকাল নগরীর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যখন মতবিনিময় সভা করছিলেন, এর কয়েক ঘণ্টা আগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ব্যানারে নগরীর দামপাড়া এলাকায় একটি ঝটিকা মিছিল বের করা হয়। মতবিনিময় সভা শেষে বিষয়টি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নজরে আনা হলে তিনি বলেন, শুধু চট্টগ্রাম না, ঢাকায়ও মিছিল হয়েছে। তাদের অনেককে কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আইনের আওতায় আনার পরেও অনেকে কিন্তু জামিন পেয়ে যায়। তারা যেন আর সহজে জামিন না পায়, সেদিকে লক্ষ রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় মিছিলের সংখ্যা বাড়বে, প্রচুর মিছিল হবে। কিন্তু এই মিছিল তখন হবে না। তখন সবাই মিছিলের জন্য বেরিয়ে যাবে, অনেক মিছিল হবে কিন্তু এখন যারা ছোটখাটো মিছিল করে এগুলো হবে না।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী সবাই কিন্তু আগামী জাতীয় ইলেকশনে থাকবে। এখন মাঠে ত্রিশ হাজারের মত সেনাবাহিনী আছে, ওই সময় কিন্তু এক লাখের মত সেনাবাহিনী থাকবে, নেভি থাকবে, এয়ারফোর্স থাকবে। আর আমাদের তো পুলিশ আছেই, বিজিবি আছে, আনসার আছে, কোস্ট গার্ড আছে, র‌্যাব আছে, সর্বোপরি প্রশাসন তো রয়ে গেছে। নির্বাচন তো শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন নির্ভর করে জনগণের ওপর। জনগণ হল এখানে প্রধান। জনগণ যদি নির্বাচনের মাঠে নেমে যায়, তাহলে কেউ কিন্তু আর আটকাতে পারবে না। আর রাজনৈতিক দলগুলো, তাদের মধ্যে যদি একটা মতৈক্য হয়ে যায়, তাহলে সবার সুবিধা হয়। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু কিছু উদ্ধার হচ্ছে, ইলেকশনের আগে আরও উদ্ধার হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতিও খুব ভালো, তাদের প্রশিক্ষণ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমরা সজাগ আছি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া। যত তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিতে পারব, তত তাড়াতাড়ি আমাদের সমস্যা সমাধান হবে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তারা কিন্তু এখন আর বর্ডার এলাকায় নেই। পুরোটা আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে। এখন মিয়ানমারের আর্মির সঙ্গে আরাকান আর্মির একটা যুদ্ধ চলছে। আমাদের এখানে আরএসও, আরসা রয়ে গেছে। তিনি বলেন, তাদের যে অভ্যন্তরীণ সমস্যা, এগুলো অনেক সময় আমাদের ওপর এসে পড়ে। প্রতিবেশীর সমস্যা তো এসে পড়ে। তবে সীমান্তে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভালো কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই যে মিয়ানমারের আরাকান আর্মিটা, এটা বেঁচে আছে শুধু মাদকের ওপরে। প্রচুর মাদক আসে। আর মাদকের পরিবর্তে আমাদের দেশ থেকে যাচ্ছে চাউল, সার, ওষুধপত্র ও আরও অন্যান্য জিনিস। আমরা আলোচনা করেছি, এগুলো যেন যেতে না পারে। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়ে যা করছে তা আরও ধ্বংসাত্মক : খসরু
পরবর্তী নিবন্ধদগ্ধ ১০ শ্রমিকের মধ্যে মারা গেলেন আরও একজন, মৃত্যু বেড়ে ৬