আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা, প্রেমিক কারাগারে

পার্লারে তরুণীর মৃত্যু

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:২৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে বিউটি পার্লারে তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে বেরিয়ে এসেছে পরকীয়া এবং প্রতারণার করুণ কাহিনী। দুই বছরের পরকীয়ার টানাপোড়েনের পর মর্মান্তিক পরিণতিতে শেষ হলো প্রিয়াংকা বিশ্বাসের (৩৫) জীবন। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ গত মঙ্গলবার কর্ণফুলীর ইছানগর থেকে গ্রেপ্তার করেছে প্রেমিক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে (৩৫)। গতকাল আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, নগরীর জিইসি মোড়ের সন্নিকটস্থ ‘নাদিয়া’স মেকওভার’ এর ম্যানেজার প্রিয়াংকা বিশ্বাস দুই বছর আগে ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীরের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়ান। সমপ্রতি অন্যত্র জাহাঙ্গীরের বিয়ে ঠিকঠাক হলে তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন প্রিয়াংকা। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে প্রায়ই ঝগড়াবিবাদ ও কথা কাটাকাটি হতো। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে দুইজনের বার্তা আদান প্রদানের তথ্য প্রমাণ উদ্ধার করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রিয়াংকা নিজের কর্মস্থলে যাওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ হোয়াটসঅ্যাপে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর পার্লারের ওয়াশরুমে ঝর্ণার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

ঘটনার ব্যাপারে পাঁচলাইশ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে প্রিয়াংকা বিশ্বাসের কললিস্ট, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পরকীয়ার ব্যাপারটি উদঘাটন করে। গত মঙ্গলবার পুলিশ কর্ণফুলীর ইছানগর এলাকা থেকে জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে। তিনি সেখানে একটি সিমেন্ট কারখানায় কর্মরত বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর পরকীয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, দীর্ঘ দুই বছর ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। জাহাঙ্গীর পুলিশকে জানান, প্রিয়াংকাকে নিয়ে গত ২৪ আগস্ট তিনি ঢাকায় যান এবং ২৪ ও ২৫ আগস্ট ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় বন্ধুর বাসায় একসঙ্গে থাকেন। ওই সময় তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয় বলেও তিনি স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর আলম রাউজানের দেওয়ানপুর গ্রামের তালুকদার বাড়ির রবিউল আলমের ছেলে। তিনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার টেকনোলজি থেকে পড়াশোনা শেষ করে একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তবে দুই মাস আগে চাকরি ছেড়ে দেন এবং সহকর্মীদের জানান তার বিদেশে (জার্মানি) যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, তদন্তে প্রমাণ মিলেছে যে প্রিয়াংকার আত্মহত্যায় জাহাঙ্গীর আলম সরাসরি প্ররোচকের ভূমিকা রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

পাঁচলাইশ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। গতকাল আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়ে যা করছে তা আরও ধ্বংসাত্মক : খসরু