বড়ো অবেলায় এলেম যে

নাজনীন লাকী | বুধবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

প্রগতিশীল মানুষ আর সংকীর্ণমনা, নবীন আর প্রবীণের মন মানসিকতা। এমন তর্কের সমাপ্তি হয়তো ঘটবে না। আজীবন থাকবে। নতুনের সাথে পুরাতন অভিজ্ঞতার মিলবন্ধনের টানাটানি চলতে থাকবে।

পুরাতন ধ্যানধারণায় অনেক কিছু ভালো লাগলেও নতুনের সাথে পুরাতনের অনেক কিছুই সাংঘর্ষিক। তাইতো নতুনদের বরণ করা হয় না। আবার নতুন তার চেয়েও কম বয়সে তাদের সাথে মিশে বা তাদের ধ্যানধারণায় যখন মনোযোগ দেয় তখন লাগে দ্বন্দ্ব। আর এই যে মানিয়ে নিয়ে মেনে চলা কখনো পুরাতনরা জিতে যায় বা হার মানে। পরবর্তীতে নতুন এর কাছে আত্মসমর্পণ।

আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা, তোমরা এ যুগে সে বয়সে লেখাপড়া কর মেলা। উত্তর মেরু দক্ষিণ মেরু সব তোমাদের জানা, আমরা শুনেছি সেখানে রয়েছে জ্বীন, পরী দেও দানা।’ এই হলো পুরোনো আর নতুন এর পার্থক্য।

পুরান চাল ভাতে বাড়লেও নতুনের কলাকৌশলের কাছে হার মানতে হয়। এই যুগও একদিন পুরনো হবে। পুরনো হবে আরো প্রাচীন। এই দন্ধের টানাপড়েন কভু শেষ নাহি হবে। পুরনো বড়োই সেকেলে, ধীর স্থির। কচ্ছপের গতির মত। আর নতুনরা যেন খরগোশের মতোই লাফিয়ে চলে। অস্থির চঞ্চল আর এখানেই চমৎকার। ঈশ্বর পৃথিবীকে সাজিয়েছেন তেমনই দ্রুত ও স্থির প্রতিমায়। সব ঘটনায় স্থিরতা দেখানো যাবে না, আবার অতি দ্রুত আর অস্থিরতাশ সব সমাধান হয় না। হুটহাট সিদ্ধান্তে ফলাফল কখনো জিরো। আবার অতি স্থিরতায় ফলাফল শূন্যের কোটায় যেতে দেখা যায়। কোনটি গ্রহণ করবেন? হ্যাঁ প্রগতিশীল হোন, হতেই হবে। জীবন যেখানে যেমন। তিন ঘন্টার পরীক্ষা তো আর পাঁচ ঘন্টা দেওয়া যায় না! আবার চার ঘণ্টার পরীক্ষা এক ঘন্টা শেষ করা যায় না। এখানেই আপনার চমৎকার কার্যকারিতা। নতুনদের কাছ থেকে দ্রুততা শিখে নেন। আর পুরাতন থেকে ধৈর্য। দুটো সংমিশ্রণের পথচলা। তা না হলে হবে না আবিষ্কার ও ভিন্ন মতাদর্শ।

পুরাতনকে আঁকড়ে ধরে রেখে কিছু সমাধান হয়তো পাবেন। কিন্তু সেখানে মতাদর্শের জায়গায় আপনি ঘুরপাক খাবেন। আবার প্রগতিশীল মতাদর্শে আপনি বিতর্কিত হলেও পরবর্তী আরো নবীন বয়সীরা হয়তো এই বিতর্কের অবসান ঘটাবে।

আপনি প্রগতিশীল হোন, বিতর্কিত হোন, আর ভিন্ন মতাদর্শে চলেন না কেন, আপনার আজকের উপস্থাপন হয়তো কাউকে না কাউকে ভবিষ্যতের পাথেয় খুঁজে দিবে। তাই আপনি আপনার মতাদর্শ সবসময়ই দিয়ে যাবেন। সাময়িক অসুবিধা, বিতর্কিত, নিন্দিত হবেন বৈকি। তারপরও কোন জাতি আপনাকে নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনায় মাতামাতি করতেও পারে। এটা মন্দ নয়। যুগ যুগ ধরে তেমনি হয়ে আসছে। মতাদর্শন, মতামত আর মতবাদ তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসূর্যাস্তে বিষাদের রং
পরবর্তী নিবন্ধপিছুটান