অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষকে সাথে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সবার অংশগ্রহণে প্রগতিশীল, কল্যাণময় বাংলাদেশ গড়তে মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে। ধর্মের ভিত্তিতে নয়– জ্ঞান, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে। কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বৌদ্ধ সেটি বিষয় না। দেশের নাগরিক হিসেবে দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। কোনো বিভাজন কিংবা বৈষম্যের শিকার যাতে কেউ না হয় এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সতর্ক।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর ও আর নিজাম রোডস্থ গোলপাহাড় কালী মন্দির ও শ্মশান পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন। পরে তিনি মন্দির পরিচালনা পরিষদ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। বিডিনিউজ জানায়, মাজার ও মন্দিরে হামলাকারীদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই মন্তব্য করে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। এটা অনেকটা পলিটিক্যালি মোটিভেটেড। মাজারেও হামলা চালায়। মন্দিরও তারা অপবিত্র করার চেষ্টা চালায়। আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। যাতে আমাদের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশকে কেউ বিনষ্ট করতে না পারে। যারা উপাসনালয়, যেকোনো ধর্মের উপাসনালয়– মাজার, ধর্মীয় স্থাপনা যারা অপবিত্র করতে চায় বা পাথর নিক্ষেপ করে, তারা অপরাধী। তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নাই।
তিনি বলেন, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ যাতে কেউ নষ্ট করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় আসন্ন দুর্গাপূজার উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিতে তাগিদ দেন। মণ্ডপে হামলার শঙ্কা থাকলে যে কোনো ধর্মের মানুষের সযোগিতা চাইতেও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এদেশে সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম ও আচার–অনুষ্ঠানাদি স্বাধীনভাবে পালন করে আসছে। এর ব্যত্যয় ঘটতে পারবে না। তাহলে এদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি নির্ভয়ে সকল ধর্মের মানুষকে তাদের অনুষ্ঠান, উৎসব পালন এবং সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
গোলপাহাড় মহাশ্মশান ও মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি দোদুল কুমার দত্তের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ দাশ বিশুর পরিচালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত, পরিষদের সহ–সভাপতি নিকেল দে, লেলিন পাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনমুন দত্ত মুন্না, অমলকৃষ্ণ নাথ টুটুল, রুবেল দে, চন্দন মহাজন, মিহির দে, পরিষদ নেতা যীষু নাথ, জয়দেব বৈদ্য, লায়ন সন্তোষ নন্দী, কুমার বিশ্বাস, মৃদুল কান্তি কর্মকার, শিমুল মুহুরী, অর্পন ধর, সৃজন রায়, অসীম ধর, সনজয় মজুমদার, বিপ্লব দে, বিপুল দাশ, রনজিত শীল, রুবেল চৌধুরী, রাকেশ ধর প্রমুখ।
মতবিনিময়কালে ধর্ম উপদেষ্টা গোলপাহাড় কালী মন্দির ও শ্মশানের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।