নিউ ইয়র্কের কনসাল জেনারেলের পদত্যাগ দাবি এনসিপির

হাসিনার বুলেটে ভয় পাই নাই, ডিমে ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না : আখতার

| বুধবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:১২ পূর্বাহ্ণ

নিউ ইয়র্কে এনসিপি নেতাদের ওপর আওয়ামী লীগের হামলার ঘটনায় ব্যর্থতার জন্য কনসাল জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেছেন, এ হামলার সঙ্গে কূটনৈতিক মিশনের কিছু কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারে। এদিকে বিমানবন্দরে এক যুবলীগ নেতার ডিম ছোড়ার ঘটনায় ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, এই প্রজন্ম হাসিনার ছোড়া বুলেটে ভয় পায় নাই। ওদেরই ছোড়া ডিমে ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। খবর বিডিনিউজের।

ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। আমরা এর আগে জুলাই পদযাত্রায় গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের ওপর হত্যার নীল নকশা নিয়ে আক্রমণ দেখেছি। গণঅভ্যুত্থানের নেতা উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এর উপর লন্ডন ও আমেরিকায় হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়া ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী তিনটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের ওপর এয়ারপোর্টে হামলা হয়েছে। এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগরা হামলা করেছে।

তিনি অভিযোগ করেন, ক্রমাগত হামলা, ষড়যন্ত্র এবং অপতৎপরতা চললেও সরকারের পক্ষ থেকে উপযুক্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই ঘটনাগুলার সাথে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা জড়িত। ভেতর থেকে এই ইনফরমেশনগুলো লিক করা হয় এবং সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিরাপত্তা প্রদানের যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেই ব্যবস্থাগুলো যথাযথ ছিল না। আমরা এর নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

নাহিদ বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে আমরা বসব এবং তার থেকে আমরা জবাবদিহিতা চাইব। কেন বারবার এই ঘটনাগুলো ঘটছে দেশের বাইরে? আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখছি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক যে নিয়োগগুলো দেওয়া হচ্ছে সেটা নিয়ে নানা বিতর্ক হচ্ছে। ফ্যাসিবাদী জামানায় যারা যারা নিয়োগ পেয়েছিল, তাদের সম্পূর্ণরূপে অপসারণ হয়নি বা তারা থেকে গেল, কেন থেকে যাচ্ছে সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট জবাব আমরা পাইনি।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে আমরা এই দাবিগুলো পেশ করব এবং তার কাছ থেকে আমরা জবাবদিহিতা চাইব যে আমাদের বিদেশে যে দূতাবাসগুলো রয়েছে, তারা কেন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে এবং কেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী তৎপরতা তারা বন্ধ করতে পারছে না।

এনসিপি নেত্রী নাহিদা সারোয়ার নিভা, তাজনূভা জাবীন, সালেহ উদ্দিন সিফাত, আল আমিন, সাইফ মোস্তাফিজ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আখতারের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া : মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিক পার্টিএনসিপির ‘ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্সের ফেসবুক পেইজে প্রচারিত এক ভিডিওতে আখতার হোসেনকে বলতে শোনা যায়, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবে ও প্রকৃতিগতভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা সন্ত্রাস করবে। তিনি বলেন, এয়ারপোর্টে আজকে আওয়ামী লীগ হুংকার দিয়ে আসছিল, অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল, বিশেষ করে তাসনিম জারাকে (এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক) উদ্দেশ্য করে। এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র। আখতার বলেন, বাংলাদেশের যারা স্বাধীনতাকামী মানুষ, জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির মানুষ, তাদের ওপর এভাবে হামলে পড়বে, এতে আমরা অবাক হই না। বরং আমরা মনে করি, এই এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ছিল, সেটা সামান্য অগ্রসর হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী যারা পালিয়ে এসেছে, তারা বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস করছে।

আখতারের ওপর ডিম ছোড়ার ঘটনায় মঙ্গলবার এনসিপি ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্স এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ। যদি সরকারি সফরের অংশগ্রহণকারীরা ন্যূনতম নিরাপত্তা না পান, তবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর অস্তিত্বের যৌক্তিকতা কোথায়সে প্রশ্নও তোলা হয় ওই বিবৃতিতে।

অ্যালায়েন্স বলছে, জুলাই বিপ্লবের সময় যারা জীবন বাজি রেখে লড়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হামলাকারীদের ক্ষোভ থামেনি। আখতার হোসেনকে এখনো তাঁর সংগ্রামের মূল্য দিতে হচ্ছে, এটা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকলকাতার ‘এই সময়ের’ সেই সাক্ষাৎকার এআই দিয়ে বানানো : ফখরুল
পরবর্তী নিবন্ধঅবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ