আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় গতকাল রবিবার ষোলশহরস্থ আলমগীর খানকা–এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়ায় চট্টগ্রাম মহানগরীর মসজিদসমূহের ইমাম/খতিবগণের সাথে বিশেষ সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওলাদে রাসুল, পীর–এ বাঙ্গাল, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। তিনি বলেন, ইসলাম মানেই শান্তি। আর এই শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রধান মারকাজ হলো মসজিদ। ইমাম–খতিবদের দায়িত্ব ইসলামের এই আসল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে অবিরত কাজ করে যাওয়া। তিনি বলেন, মুসলমানদের নিয়মিত অভিবাদন হচ্ছে সালাম, এবং জবাবেও রয়েছে সালাম। আর এর উদ্দেশ্য হলো মুসলমানরা পরস্পর শান্তি ও নিরাপত্তার চর্চাতেই লিপ্ত। সুতরাং ইসলামের নামে হানাহানি এবং অশান্তি সৃষ্টি করা কারো কাম্য নয়। আজ পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম দেশে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই, সন্ত্রাস–হানাহানি চলছে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ্ বাংলাদেশে তুলনামূলক নিরাপত্তা ও অনেক শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যারা আমাদের জনপদে ইসলামের প্রচার–প্রসার করেছেন আজ তাদের দরগাহগুলোতে আগুন দেওয়া কাম্য নয়। তাঁরা জীবদ্দশায় আমাদের উপকার করেছেন। তাই আমাদের কর্তব্য হলো তাঁদেরকে ইন্তেকালের পর সম্মান জানানো। উত্তম সন্তান যেভাবে পিতা–মাতার মৃত্যুর পর তাঁদের প্রতি কর্তব্য–পরায়ণ হয়, আহলে সুন্নাতের অনুসারী মুসলমানরাও তেমনি পীর–আউলিয়াদের ইন্তেকালের পরও সম্মান জানায়। তিনি বলেন, যারা বর্তমানে দরগাহগুলোতে হামলা চালাচ্ছে, তাদের কারণে নিরাপদ বাংলাদেশ যেন অন্য কোনো দেশের মতো সন্ত্রাসের জনপদ না হয়ে যায়; এজন্য তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আজ পর্যন্ত সুন্নি মাদ্রাসাগুলোতে কোনো জঙ্গি–সন্ত্রাসী সৃষ্টি হয়নি– ইনশাআল্লাহ্ ভবিষ্যতেও হবে না। কারণ কেয়ামত পর্যন্ত সমগ্র দুনিয়াতে শান্তি স্থাপনের জিম্মাদারি এই সুন্নি আলেম–ইমাম ও জনগণের উপর রয়েছে। তিনি ইমাম–খতিবদের স্বার্থ, আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং সামাজিক প্রয়োজনের বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দিতে আনজুমান কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এবং এ বিষয়ে চ.সি.ক–এর সাবেক মেয়র মনজুর আলম (মনজু) সাহেবের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাসে কৃতজ্ঞতা জানান। একই সাথে, ইমামদের জন্য একটি ইমাম একাডেমি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। দা’ওয়াতে খায়র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আমাদের দরবার ভিত্তিক কোনো কার্যক্রম নয়, বরং এটি সার্বজনীন। তাই এটি বাস্তবায়নে সকল ইমাম–খতিবদের ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন আওলাদে রাসুল, সাহেবজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ)। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এবং আনজুমান ট্রাস্টের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মনজুর আলম (মনজু)। আরও উপস্থিত ছিলেন আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মনজুর আলম (মনজু), ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আমির হোসেন সোহেল, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সামশুদ্দীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এস.এম গিয়াস উদ্দীন (সাকের), ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ কমর উদ্দীন (সবুর), প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দীন। বিশিষ্ট ইমামগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান, অধ্যক্ষ হাফেজ আবদুল আলীম রেজভী, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান, অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ, মুফতি আবুল এরফান হাশেমী, অধ্যক্ষ বদিউল আলম রেজভী, উপাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী চৌধুরী, ড. আনোয়ার হোসেনসহ চট্টগ্রাম মহানগরীর সহস্রাধিক মসজিদের ইমাম–খতিবগণ। আনজুমান ট্রাস্টের মুখপাত্র এড. মোছাহেব উদ্দীন বখতিয়ারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব ক্বারী আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন।
মিলাদ–ক্বিয়াম পরিচালনা করেন মুফতি কাজী মুহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ। সবশেষে, বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন পীর–এ বাঙ্গাল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।