সমকালের দর্পণ

অস্থিরতা কি পুঁজিবাদ বিকাশে সহায়ক?

মেজর মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম (অব.) | রবিবার , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ

শিরোনামের প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে কয়েকটি বিষয় আলোচনা করা প্রয়োজন। যেমন বর্তমানে পুঁজিবাদের বিশ্ব মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর দেশে দেশে নানা অস্থিরতা সৃষ্টিতে তৎপর। এর অন্যতম উদাহরণ মধ্যপ্রাচ্য। মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশগুলি কমবেশি সবাই মার্কিন তাবেদার। এরপরও দেখা গেছে কখনো আরব বসন্তের নামে, কখনো ‘ওয়ার অন টেরর’ তথা সন্ত্রাস দমনের নামে আরব দেশগুলিকে অস্থিতিশীল করে রাখা হচ্ছে। বলাবাহুল্য এটি করা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনে এবং সম্মতিতে। আর এই ইন্ধন এবং সম্মতির মাধ্যমে অস্থিতিশীল করার কাজটি করে যাচ্ছে ইসরাইল নামক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫১তম অঙ্গরাজ্যটি। সাম্প্রতিক ইসরাইল কর্তৃক ইরান আক্রমণ তাতে ইসরাইলের পক্ষ হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বি ৫২ বোমারু বিমানের মাধ্যমে ইরানী পারমানবিক স্থাপনা সমূহের উপর একেকটি ২২০০০ (বাইশ হাজার) পাউন্ডের ১৪ (চৌদ্দ) টি বোমা বর্ষণ ইরানকে দুর্বল করে অস্থিতিশীল করার কৌশলেরই নামান্তর। সিরিয়ার র্সা্বভৌমত্বের বিষয়টির তোয়াক্কা না করে দেশটির উপর ইসরাইল কর্তৃক যখন তখন বিমান আক্রমণের মাধ্যমে সেখানে চরম অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, এটিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সমর্থিত।

ইয়েমেনে হাউথি’দের উপর বিমান হামলা, ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা। এটিও পুরোপুরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পরিকল্পিত এবং ইসরাইলীদের দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক ভেনিজুয়েলাকে অস্থিতিশীল করার মার্কিন প্রচেষ্টা শিরোনামের প্রশ্নটির হ্যাঁ সূচক উত্তরই দেয়। মাদক উৎপাদন এবং রপ্তানীকারক দেশ হিসাবে ভেনিজুয়েলাকে অভিযুক্ত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় তার যুদ্ধ জাহাজসহ মেরিন কোরের প্রায় সাত হাজার সৈন্য ভেনিজুয়েলা অভিমুখ উপকূলে প্রেরণ করে। এক পর্যায়ে ভেনিজুয়েলার কাছাকাছি আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমায় মাদক চোরাচালানি অভিযোগে এক নৌ যান আক্রমণ করে ঐ নৌযানের ১১ (এগার) আরোহিকে হত্যাও করা হয়। উত্তেজনার এমন পর্যায়ে ভেনিজুয়েলা তার নিয়মিত সৈন্যবাহিনীর বাইরে প্রায় ১,০০,০০০(একলক্ষ) রিজার্ভ সৈন্যকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আসন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তলব করে। যেই ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে বর্তমান মার্কিন আগ্রাসন সেই ভেনিজুয়েলার কিছুটা অতীত পাঠকদের জন্য তুলে ধরছি।

১৪৯৮ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস তার সমুদ্র অভিযানে প্রথম ভেনিজুয়েলা আবিষ্কার করেন। সেই সময় ভেনিজুয়েলার জনসংখ্যা ছিল সর্বমোট ৪০,০০০০ (চল্লিশ লক্ষ)। পরবর্তীতে স্পেনিশরা ভেনিজুয়েলাকে তাদের উপনিবেশে পরিণত করলে, প্রথমে স্থানীয় আদিবাসীদের এবং পরবর্তীতে আফ্রিকা থেকে দলে দলে দাস শ্রমিকদের ভেনিজুয়েলার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে নিয়োজিত করে। এই সূত্রে বর্তমানের ভেনিজুয়েলিয়ান বহু বর্ণের জনগোষ্ঠির সৃষ্টি।

উল্লেখ্য দীর্ঘ স্পেনিশ শাসনে থাকার পর ১৮১১ সালে ভেনিজুয়েলা তার স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও তা অর্জিত হয় ১৮২১ সালে ‘সাইমন বলিভার’ নেতৃত্বে গ্রান্ড বলিভিয়া’য় যোগদানের মাধ্যমে। ১৮৩০ সালে গ্রান্ড বলিভিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভেনিজুয়েলা সত্যিকারের স্বাধীনতা অর্জন করে।

অনেক চড়াই উৎরাই, ইতিহাসের নানা বাঁক পেরিয়ে ভেনিজুয়েলার বর্তমান অবস্থান। প্রেসিডেন্ট হুগো স্যাভেজ অসুস্থ হয়ে পড়লে ২০১৩ সাল থেকে নিকোলাস মাদুরু মরোস ভেনিজুয়েলার শাসন কর্তৃত্বে। মাদুরু যানবাহন শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন থেকে উঠে আসা একজন নেতা। এই সূত্রে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় তার দেশ পরিচালনা। এখানেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার সংঘাত। মাদুরু রাশিয়া এবং চীনের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। মার্কিন ‘বানানা রিপাবলিক’ তথা তল্পীবাহক হতে অস্বীকৃতিও ভেনিজুয়েলার জন্য সময়ে সময়ে বিপদ এবং ঝুঁকি বয়ে আনে। বিগত বিশ বছরে ভেনিজুয়েলায় সরকার পরিবর্তনের বহু ক্যূ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

উল্লেখ্য ‘বানানা রিপাবলিক’ ধারনাটি মার্কিন লেখক ‘ও হেনরী’ বিশ শতকের প্রথমার্ধে চালু করেন। এই ‘বানানা রিপাবলিক’ তাদেরই বলা হয় যেসব দেশ একটি রপ্তানীমুখি পণ্য নিয়ে তার রপ্তানী বাণিজ্যে ব্যাপৃত থাকবে, দেশটির অর্থনীতি বিদেশী বড় বড় কোম্পানীগুলির করতলগত থাকবে, দেশটিতে শোষক লুণ্ঠনকারীদের অবাধ বিচরণ থাকবে এবং সর্বোপরি দেশটির অর্থনীতি থাকবে অস্থিতিশীল। ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলির কোন কোনটির এককভাবে কলা রপ্তানী নির্ভরতা এবং এই প্রেক্ষিতে ভঙ্গুর অর্থনীতি বুঝাতেই মূলত ও হেনরী’র এ ধারনার প্রচলন।

২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে তার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করলে র্মাকিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের সরবরাহের যে ঘাটতি দেখা দিলে তা পূরণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাদুরুকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের প্রস্তাব দেয়। মাদুরু এ প্রস্তাবে অসম্মতি প্রকাশ করে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলার উপর ক্ষিপ্ত হয়। এরই ফলশ্রুতিতে বর্তমানের ভেনিজুয়েলা সংকটের সৃষ্টি। এবার দৃষ্টি ফিরাই মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। নাইন ইলাভেন’ এর পর ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার অজুহাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্থানে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। এই সুযোগে আমেরিকার ‘ডিপ স্টেট’ ইরাক আক্রমণের অজুহাত খুঁজে বের করে। সেই অজুহাত ইরাকের কাছে ‘মানব বিধ্বংসী’ মারণাস্ত্র রয়েছে। জাতিসংঘ অস্ত্র পরিদর্শক দল, কর্নেল রিটারের নেতৃত্বে আদ্যপান্ত’ তদন্ত শেষে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। এতদসত্তে ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ‘অপারেশন ডের্জাট স্ট্রম’ নাম দিয়ে ইরাককে আক্রমণ করা হয়। পরবর্তীতে দেখা যায় ইরাকের কাছে কোন ধরনের ‘মানব বিধ্বংসী’ মারণাস্ত্র নাই। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগের উপর ভিত্তি করে পুঁজিবাদী বিশ্ব তাদের অর্থনৈতিক লক্ষ্য হাসিল করতে এ আক্রমণ পরিচালনা করে।

তাদের সেই লক্ষ্য ছিল ইরাকে একটি দুর্বল অস্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করে ইরাককে নানা অঞ্চলে বিভক্ত করা। এই বিভক্তির মাধ্যমে ঐ অঞ্চল সমূহ বিভিন্ন তেল কোম্পানীকে ইজারা দানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা, এতে একদিকে যেমন বেশি তেল উত্তোলন করা যাবে অন্যদিকে অতিরিক্ত সরবরাহ জনিত কারণে মূল্যস্তর সবসময় কমিয়ে রাখাও সম্ভব হবে। অতিরিক্ত সরবরাহ এবং কম মূল্যস্তর দুটিই পুঁজিবাদী অর্থনীতির মুনাফা তথা বিকাশের জন্য দারুন সহায়ক। উল্লেখ্য, এই অঞ্চলে তথা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলকে ঘিরে পুঁজিবাদী বিশ্ব কীভাবে অস্থিরতা তথা গণহত্যার মাধ্যমে তাদের পুঁজির বিস্তার ঘটাচ্ছে, পুঁজিবাদীদের রক্তচক্ষুকে ভ্রুক্ষেপ না করে ফ্রান্সেসকা আলব্যানেজ সেই নিমর্ম চিত্র ৩ জুলাই ২০২৫ জেনেভায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় অধিকৃত প্যালেস্টাইন এবং গাজার উপর তার প্রতিবেদন উপস্থাপন করে তা তুলে ধরেছেন। আলবানেজ প্যালেস্টাইন বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ রেপোটিয়ার, ইতালিয়ান বিখ্যাত মানবাধিকার বিষয়ক আইনজ্ঞ।

তার রিপোর্টে তিনি গাজার গণহত্যাকে উল্লেখ করেছেন ‘ফ্রম ইকোনমি অব অকোপেশন টু ইকোনমি অব জেনোসাইড’। ইসরাইল কর্তৃক নির্বিচার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমূহের উপর আক্রমণ পরিচালনা এবং তাদের উপর এক ধরনের মনস্তাত্বিক অস্থিরতার সৃষ্টি করা সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে সেখানে নৈতিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে। এর পিছনে নিশ্চিত কারণ হিসাবে ধরে নেওয়া যায় মার্কিন ‘ওয়ার ইকনমি’। অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশগুলি যতই সামরিক ঝুঁকিতে থাকবে ততই তারা অস্ত্র ক্রয় এবং মওজুদে ব্রতী হবে। অতএব ইসরাইল সৃষ্ট এই অস্থিরতা, নিরাপত্তা হীনতার সিনড্রম প্রাকারন্তরে মার্কিন ওয়ার ইন্ডাস্ট্রিজের জন্য সাপে বর। যতই অস্থিরতা তত অস্ত্রের চাহিদা, যত চাহিদা তত বিক্রি, যত বিক্রি তত আয় তত লাভ পুঁজিবাদী অর্থনীতির পোয়াবারো।

পুঁজিবাদী অর্থনীতির এমন এক ঘুর্ণন চক্রে বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি। এই উপমহাদেশের দিকে দৃষ্টি ফিরালে বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবে চোখে পড়বে। ভারত পাকিস্তান দুটি দেশের জনগণই দারিদ্রপীড়িত। এখানে দারিদ্রপীড়িত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যের যোগান নাই, শিক্ষার সুযোগ নাই, চিকিৎসা ব্যবস্থা মান্দাতার আমলের অথচ দুটি দেশরই রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্রের বিশাল মওজুদ, দুটি দেশেই রয়েছে সর্বাধুনিক যুদ্ধ বিমান বহর, সর্বাধুনিক নৌবহর। কোন দেশ রাফায়েল যুদ্ধ বিমান কিনেছে ত অপর দেশ সি ১০, কোন দেশ মিরাজ কিনেছে ত অপর দেশ এফ ১৬। অথচ নিজেদের অভুক্ত মানুষের, দরিদ্র মানুষের দারিদ্র মোচনে এরা প্রতিযোগিতাহীন।

সর্বশেষ ইসরাইলের কাতার আক্রমণের মাঝে আমরা কী বার্তা পাই? এখানে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। এ ঘাঁটি সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সজ্জিত, এ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থেকে ইসরাইলের কাতার আক্রমণের পুর্বাভাস দেওয়া হয়নি। এর পিছনের কারণ কারো জানা থাকার কথা নয়। সেই কারণ হল উপসাগরীয় দেশগুলিতে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং আরো অস্ত্রের চাহিদা সৃষ্টি। কাতারেরও রয়েছে সর্বাধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সব কিছুকে ফাঁকি দিয়ে ইসরাইল ঢুকে পড়েছে কাতার আক্রমণে। এবার বলা হবে কাতারের আরো আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। আর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে কাতার সে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করবে। একই ঝুঁকির কথা আরব আমিরাতকেও বলা হবে। ওমানকেও বলা হবে, সৌদি আরবকেও। এরা সবাই আরো আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে ক্রয় করবে।

নির্মম পরিহাস এই কয়দিন আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম’ এর গাল্ফ কো অপারেশন কাউন্সিলের দেশ সমূহ সফরের সময় সৌদি আরব ১.৫ ট্রিলিয়ন, আরব আমিরাতও একই পরিমাণ অর্থ আমেরিকায় বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। কাতার ২১৩ (দুই শত তের) টি বোয়িং বিমান ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রামে’এর ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ৪০০ (চারশত) মিলিয়ন ডলারের বোয়িং উপহার প্রদান এরপরও অস্থিরতা, এরপরও কাতার আক্রান্ত হওয়া, ঝুঁকিতে থাকা এগুলো অবধারিতভাবে পুঁজিবাদ বিকাশের স্বার্থে।

লেখক: প্রাবন্ধিক, কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট; সামরিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষাঙ্গনে ছাত্র সংসদের প্রয়োজনীয়তা
পরবর্তী নিবন্ধবাগোয়ান ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন ফরম বিতরণ