লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল জেলা ৩১৫ বি–৪ এর উদ্যোগে ডিজি কল সেমিনার, গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ডিং সেরেমনি ও লায়নিজমের ৫০ বছর পূর্তি বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম ক্লাবের অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জেলা ৩১৫ বি–৪ এর গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট ডা. জাহেদ উর রহমান। ইউনিটি মেকস প্রসপারিটি (একতাতে সমৃদ্ধি) শীর্ষক ডিজি কলের ওপর কী নোট স্পিকার হিসেবে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাবেদ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লায়ন অশেষ কুমার উকিল।
প্রধান অতিথি ড. জাহেদ–উর রহমান বলেন, ইউনিটির বেসিক দিক হলো প্রতিটি মানুষকে ধর্ম, বর্ণ, শিক্ষা সবগুলো বিষয় এক্সসেপ্ট করে নেওয়া। লায়নিজমের মূল শিক্ষা হলো মানবসেবা, ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতা। লায়নিজম মানুষকে জাতি, ধর্ম, বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে সমাজ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে। এর মাধ্যমে দুঃখী–দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রেখে আসছে লায়ন্স ক্লাব।
‘একতাতে সমৃদ্ধি’ বিষয়ের ওপর মূল বক্তব্যে অধ্যাপক মো. জাবেদ হোসেন বলেন, আমরা সবাই জানি, একা কেউ পৃথিবীকে বদলাতে পারে না। কিন্তু যখন আমরা একসাথে হই, তখন অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। আমাদের পৃথিবী আজ পরিবেশ দূষণ, বৈষম্য আর অশান্তির মতো নানা সমস্যায় ভুগছে। এসব সমস্যার সমাধান একক প্রচেষ্টায় নয়, বরং সমন্বিত চেষ্টাতেই সম্ভব। একতা মানেই শুধু একসাথে থাকা নয়, বরং একসাথে দায়িত্ব নেওয়া। তুমি যদি হাত বাড়াও, আরেকজনও হাত বাড়াবে। এইভাবে গড়ে উঠবে এমন এক শক্তি, যা পৃথিবীকে রক্ষা করবে। বিভেদ ভুলে ঐক্যের শক্তিকে কাজে লাগাই। আমাদের ছোট ছোট প্রচেষ্টাই একদিন পৃথিবীকে সুন্দর করে গড়ে তুলবে। যেখানে একতা আছে, সেখানে উন্নতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। কী নোট পেপারের ওপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামিম রেজা। তিনি বলেন, সামাজিক, সাংস্কৃতিকভাবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলে ‘একতাতেই সমৃদ্ধি’ এর প্রকৃত সুফল ভোগ করতে পারব।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন এম এ মালেক, সদ্য প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন কোহিনূর কামাল, ১ম ভাইস জেলা গভর্নর লায়ন মো. কামরুজ্জামান লিটন, ২য় ভাইস জেলা গভর্নর লায়ন মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী, কেবিনেট সেক্রেটারি লায়ন আবু মোরশেদ ও কেবিনেট ট্রেজারার লায়ন গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।
লায়ন এম এ মালেক বলেন, আমি যেখানেই যাই একটি কথা বলি। আমাদের সবাইকে একদিন এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। যাওয়ার আগে আমাদের এমন কিছু করা উচিত যাতে একটা ছাপ রেখে যেতে পারি। লায়ন্স ক্লাব এই ছাপ রাখার পথটিই আমাদের দেখিয়ে দেয়। এই ক্লাব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, এই সুন্দর পৃথিবীতে আমি, আপনি, আমরা যে একটা জায়গা পেয়েছি, তার মূল্য আমরা পরিশোধ করতে পারি মানবতার সেবা করে।
তিনি বলেন, লায়ন্স ক্লাব এ চেষ্টাটাই করে থাকে। আমরা হয়ত পুরো পৃথিবীর সবার জীবন বদলাতে পারব না। কিন্তু যার জন্য পারব তার পুরো পৃথিবীটাই বদলে যাবে।
ডিজি কল সেমিনার ও লায়নিজমের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে এবারের গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন সাবেক গভর্নর লায়ন নাজমুল হক চৌধুরী। লায়ন নাজমুল হকের হাতে গোল্ড মেডেল তুলে দেন জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু। লায়নিজমের ৫০ বছর সেলিব্রেশনে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় সাবেক গভর্নর লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়াকে। রূপম কিশোর বড়ুয়ার হাতে সম্মাননা তুলে দেন জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু। অনুষ্ঠানের শেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রোগ্রাম কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি লায়ন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম। এরপর জেলা গভর্নর অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করেন।












