মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অতি দক্ষ বিদেশি কর্মীদের বাৎসরিক ভিসা ফি এক লাখ ডলার করতে এবং ধনী ব্যক্তিদের জন্য মার্কিন নাগরিকত্বের দ্বার উন্মোচনে ১০ লাখ ডলারের ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা চালুর এক ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন। কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে গত শুক্রবার তার নেওয়া এমন সিদ্ধান্ত শিগগিরই আইনি বাধার মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, দক্ষ কর্মীদের এখন এইচ–১বি ভিসার লটারিতে অংশ নিতে খরচ হয় মাত্র ২১৫ ডলার, তাও এককালীন। ভিসা অনুমোদিত হলে আরও কয়েক হাজার ডলার বাড়তি লাগে, যা মূলত কোম্পানিগুলোই বহন করে। কিন্তু ট্রাম্পের ঘোষণায় এখন থেকে এ ভিসায় বছর বছর প্রতি কর্মীর জন্য মার্কিন কোম্পানির গুণতে হবে এক লাখ ডলার করে। সাধারণত তিন থেকে ছয় বছরের জন্য এ ভিসা দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের।
বিনিয়োগ ভিসার খরচও বছরে ১০–২০ হাজার ডলার থেকে অনেক অনেকগুণ বেড়ে যাবে। এইচ–১বি ভিসার জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি লাগে। এর মাধ্যমে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বিদেশ থেকে অতি দক্ষদের নিয়ে কর্মীর অভাব পূরণ করতো এবং খরচও বাঁচাতো। সমালোচকরা বলছেন, এই ভিসাটি হয়ে উঠেছিল বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে ভারত ও চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাওয়া কর্মীদের পাইপলাইন, যারা বছরে ন্যূনতম ৬০ হাজার ডলারেও কাজ করতে আগ্রহী থাকতেন। অন্যদিকে মার্কিন প্রযুক্তি কর্মীরা বছরে সাধারণত ১ লাখ ডলারের বেশি বেতন পান। ফলে এই ভিসা একদিকে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বেতন বৈষম্যের সুযোগ করে দিচ্ছে, অন্যদিকে মার্কিনিদের চাকরির সুযোগ কমাচ্ছে, বলছিলেন তারা।
ট্রাম্প শুক্রবার বলেছেন, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো তার এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে না। বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছেন, সব বড় কোম্পানিই তাদের সঙ্গে আছে। এ প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে অ্যামাজন, অ্যাপল, গুগল ও মেটাসহ বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মাইক্রোসফট মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
লুটনিক বলেছেন, নতুন এ পরিবর্তনের কারণে আগের তুলনায় অনেক অনেক কম এইচ–১বি ভিসা দিতে হবে বলে তারা ধারণা করছেন। এখন বছরে সর্বোচ্চ ৮৫ হাজার এইচ–১বি ভিসা দেওয়া যায়। এটা এখন কেবল আর অর্থনৈতিক ব্যাপার নেই। আপনি যদি লোকজনকে প্রশিক্ষিত করতে চান, আপনি আমেরিকানদের প্রশিক্ষিত করুন। আপনার যদি খুবই সংবেদনশীল প্রকৌশলী লাগে এবং আপনি তাকে আনতে চান, তাহলে আপনি আপনার এইচ–১বি ভিসার জন্য বছরে এক লাখ ডলার দিতে পারবে, সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী।
ট্রাম্প ১০ লাখ ডলারে মার্কিন নাগরিকত্বের দুয়ার খোলার ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা বিক্রিরও ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এ ভিসা পাওয়ার আগে কঠোর যাচাই–বাছাইয়ের মুখোমুখি হতে হবে। কোনো কোম্পানি যদি তার কোনো কর্মীকে এই ভিসা দিতে চায় সেক্ষেত্রে তাদের খরচ হবে ২০ লাখ ডলার। আর ‘ট্রাম্প প্লাটিনাম কার্ড’ মিলবে ৫০ লাখ ডলার ফি’র বিনিময়ে। এ কার্ড বিদেশিদেরকে ২৭০ দিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে করা আয়ের ওপর কোনো কর ছাড়াই থাকার সুযোগ দেবে।