মশার মাধ্যমে ১৪ কোটি মানুষকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষার চেষ্টায় ব্রাজিল

| শনিবার , ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ব্রাজিলে ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত মশার প্রজনন ঘটানো একটি জৈব কারখানা রয়েছে, যেটা বিশ্বের সবচেয়ে বড়। কারখানাটি করেছে ওলবিটো নামের একটি কোম্পানি, যারা বলছে, এসব মশার মাধ্যমে আগামী কয়েক বছরে ব্রাজিলের প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে ডেঙ্গুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। গত জুলাইয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় কুরিটিবা শহরে যাত্রা শুরু করে ‘ওলবিটো দু ব্রাজিল’ নামের কারখানাটি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন বলছে, এ কারখানায় যেসব মশার প্রজনন ঘটে, সেগুলো কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই ব্যবহার করে।

কারখানাটি ব্রাজিলভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানওজওয়ালদো ক্রুজ ফাউন্ডেশনের ‘ওয়ার্ল্ড মসকিউটো প্রোগ্রাম’ ও ‘ইনস্টিটিউট অব মলিকুলার বায়োলজি অব পারানার’ একটি যৌথ উদ্যোগ। ওলবিটো বলছে, ওই কারখানায় প্রতি সপ্তাহে মশার ১০ কোটি ডিম উৎপাদন সম্ভব। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী লুসিয়ানো মোরেইরা বলেন, প্রতি ছয় মাসে ‘ওলবিটো দু ব্রাজিল’ প্রায় ৭০ লাখ মানুষকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে। খবর বিডিনিউজের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাডব্লিউএইচও বলছে, এইডিস এজিপ্টা মশাবাহিত রোগটি স্থানীয়ভাবে ‘হাড়ভাঙা জ্বর’ নামেও পরিচিত। প্রতিবছর বিশ্বে কয়েক কোটি মানুষ এতে সংক্রমিত হয়। ডব্লিউএইচওর হিসাবে, প্রাণঘাতী এই রোগে গেল বছর ব্রাজিলে ৬ হাজার ২৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া মশাকে ডেঙ্গুর পাশাপাশি জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো অন্যান্য রোগ ছড়াতে দেয় না। ফলে সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ মশা বাইরে ছেড়ে দেন, যেন সেগুলো অন্যান্য মশার মাধ্যমে বংশ বিস্তারের মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পারে।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এই পদ্ধতিতে ২০১৪ সাল থেকে ব্রাজিলের ১৪টি শহরের ৫০ লাখের বেশি মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া গেছে। ওলবিটো দু ব্রাজিলের ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) অ্যান্তোনিও ব্রান্দাও বলেন, ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া কেবল পোকামাকড়ের কোষের মধ্যেই জীবিত থাকতে পারে। ফলে পোকামাকড় মারা গেলে ওই ব্যাকটেরিয়াও মারা যায়।

এ পদ্ধতিকে নিরাপদ মনে করা ব্রান্দাও বলেন, প্রকৃতিতে ৬০ শতাংশের বেশি পোকামাকড়ে ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। ওলবিটো দু ব্রাজিল এসব মশা গাড়িতে ভরে নিয়ে ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ এলাকাগুলোতে ছেড়ে দেয়। কারখানাটির আঞ্চলিক কার্যক্রমের সমন্বয়ক টামিলা ক্লেইনে বলেন, যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি, সেসব এলাকা অগ্রাধিকার পায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরেলওয়ের কলোনিতে বছরের পর বছর বহিরাগতদের বসবাস
পরবর্তী নিবন্ধবিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত