রাউজানে বিসিক (বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কর্পোরেশন) শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ মাঝ পথে এসে ঝিমিয়ে পড়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে এই শিল্পাঞ্চলের কাজ বন্ধ আছে বলে স্থানীয় জনসাধারণ জানিয়েছেন। স্থানীয়রা বলেছেন, প্রকল্প কাজ বন্ধ হওয়া অবস্থায় কিছু কিছু স্থানে প্রকল্পের সীমানা দেয়াল ধসে মাটির সাথে মিশে গেছে। ভিতরের ভরাট করা মাটি বৃষ্টির পানিতে প্রকল্পের বাইরে নিচু এলাকায় চলে যাচ্ছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম রাঙামাটি চার লেন মহাসড়কের রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৫ একর জায়গার উপর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামনের দিকে তোরণ রেখে চতুরদিকে সীমানা প্রাচীরের মধ্যে রয়েছে বিসিকের তিন তলা কার্যালয় ভবন। খবর নিয়ে জানা যায়, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একনেক সভায় অনুমোদিত দেশের বিভিন্নস্থানে সাতটি শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠায় ১২ হাজার আটশ ৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সাতটির মধ্যে তিনটি হচ্ছে চট্টগ্রামের মীরসারাই, সন্দ্বীপ ও রাউজানে। রাউজানের এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রয়েছে প্রায় আশি কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাউজানের এই শিল্প জোনে থাকবে ১৮৪টি শিল্প প্লট। শিল্প উদ্যোক্তদের মতে রাউজান ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত উপযোগী স্থান। এ অঞ্চলে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত নানা শ্রেণির কাঁচামালের সহজলভ্যতা রয়েছে। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী পার্বত্য জেলা রাঙামাটির উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার ফলমূল নষ্ট হয়। এ অঞ্চলে উৎপাদিত ফলমূল প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে কনজ্যুমার প্রোডাক্ট তৈরির শিল্প কারখানা হলে অনেক পচনশীল ফলমূল নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকবে না। এটি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। রাউজানের বিসিকের এই প্রকল্প নিয়ে কথা বললে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ বলেন, প্রকল্পটি সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারণা নেই। প্রকল্পটির সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তারা কোনো সময় এটা নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেননি। এ কারণে তেমন কিছু বলতে পারছি না। উপজেলার এই শীর্ষ কর্মকর্তা প্রকল্পটি নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে দেশ ও এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে। বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
রাউজানের এই শিল্পনগরীর বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) চট্টগ্রাম জেলার উপমহাব্যবস্থাপক এস এম এম আলমগীর আল কাদেরী বলেন, রাউজান সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ও জঙ্গল মৌজায় ৩৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ৭৯ কোটি ৮৪ হাজার টাকায় রাউজানের বিসিক শিল্প নগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবারহ করতে সাব স্টেশন করা হয়েছে। গ্যাস সরবরাহে পাইন লাইন স্থাপন হয়েছে। এখন প্রস্তুত করে রাখা ওই ভূমিতে ১৮৪টি শিল্প প্লট তৈরির কাজ শুরু করা হবে। প্রকল্পের ধসে যাওয়া সীমানা প্রাচীর পুনঃমেরামতসহ প্রয়োজনী কাজ চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।












