ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য হলেন আমিনুল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৪:৩০ অপরাহ্ণ

গত ৮ জুলাই গঠিত ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে আহবায়কের পরই প্রথম সদস্য হিসেবে নাম ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের। সাবেক এই অধিনায়ক এখন আর সেই তালিকায় নেই। ঠিক তার জায়গাতেই এখন আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম। দুই মাসেই এমন পরিবর্তন আনায় কৌতূহল জাগছে অনেক। পাশাপাশি এই পদক্ষেপ উসকে দিচ্ছে অনেক প্রশ্নও। সামনেই যে বিসিবির নির্বাচন। গত ৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম সচিব) . শেখ মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন স্বাক্ষরিত ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে আমিনুলকে রাখা হয়েছে ‘ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রাক্তন অধিনায়ক হিসেবে। তবে এখন আমিনুলের সবচেয়ে বড় পরিচয় বিসিবি সভাপতি। মূল প্রশ্নটি এখানেই। এর মধ্যেই তিনি ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবির আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার। গত কিছুদিন ধরে ক্রিকেটাঙ্গনে গুঞ্জন চলছে, ঢাকা বিভাগের কাউন্সিলর হয়ে বিসিবি নির্বাচনে দেখা যেতে পারে আমিনুলকে। সেই গুঞ্জনই এবার বাস্তবতার ভিত্তি পেল আচমকা এই পদক্ষেপে।

বিসিবিতে পরিচালক পদে লড়তে হলে আগে কাউন্সিলর হতে হয়। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সরাসরি মনোনয়নে পরিচালক হতে পারেন দুজন। আমিনুল যেমন ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়ন থেকেই পরিচালক হয়ে এরপর বিসিবি সভাপতি হয়েছেন। তবে এই মনোনয়ন পুরোপুরি নির্ভর করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তথা সরকারের ওপর। সরকার পরিবর্তন হয়ে গেলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নও বদলে যেতে পারে। কিন্তু অন্য ক্যাটাগরি থেকে পরিচালক হলে তাকে সরাসরি সরিয়ে দিতে পারেন না সরকার। গুঞ্জন আছে, এই কারণেই আমিনুলকে এখন বিভাগের কাউন্সিলর হিসেবে আনা হচ্ছে। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিসিবির আগামী নির্বাচনে আমিনুলকে সমর্থন দিচ্ছেন বলেও জোর গুঞ্জন চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। গত সোমবার ক্রীড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভাতেও বারংবার এই প্রশ্নটির মুখোমুখি হতে হয়েছিল ক্রীড়া উপদেষ্টাকে। তিনি অবশ্য অভিযোগ বা গুঞ্জনটি উড়িয়ে দিয়েছেন তখন। তবে সেসব অভিযোগের বাস্তব ভিত্তি যে আছে, সেটি ফুটে ওঠে ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে পরিবর্তন আনাতেও। সেখানে সাবেক ক্রিকেটার ও আন্তর্জাতিক আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসির পরিবর্তে হুট করেই আনা হয়েছে নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে।

নাজমুল এখন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নেই পরিচালক হয়ে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তাকেও আগামী নির্বাচনে ভিন্ন ক্যাটেগরি থেকে পরিচালক করার পরিকল্পনা আছে বলে গুঞ্জন আছে এবং তিনিও ক্রীড়া উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ বলে ক্রীড়াঙ্গনে শ্রুতি আছে। বিসিবি নির্বাচনের আগে পর্দার আড়ালের নানা কিছু নিয়ে প্রশ্নের শেষ নয় এখানেই। বৃহস্পতিবার নতুন একটি পরিপত্র জারি করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। উপসচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বিসিবির গঠনতন্ত্র (২০২৪ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী সাধারণ পরিষদের কাউন্সিলর এর তালিকা চূড়ান্ত প্রণয়ন। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে সাধারণ পরিষদ গঠন এবং পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন ২০২৫ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কাউন্সিলর মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বিসিবির গঠনতন্ত্র (২০২৪ সালে সংশোধিত)-এর আওতায় বিশেষ করে অনুচ্ছেদ ৯.() এবং () আবশ্যিকভাবে অনুসরণের জন্য কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণকে নির্দেশনা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। যেভাবে এখানে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেটা বিসিবির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী কি না ও এই পদক্ষেপ সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন উঠছে। যেটির মানে, জেলা ও বিভাগীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থায় অ্যাডহক কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে, তাদের মধ্য থেকেই কাউন্সিলর বানাতে হবে। সেক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদিত ব্যক্তিদের মধ্য থেকেই কাউন্সিলর পদ পাবেন। আইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না। সব মিলিয়ে বিসিবি নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, সংশয়, প্রশ্ন আর বিতর্কের মেঘও ঘনীভূত হচ্ছে ক্রমে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সবচাইতে বেশি ছক্কার মালিক লিটন দাস
পরবর্তী নিবন্ধসামনের ম্যাচগুলোকে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ বললেন তাওহিদ হৃদয়