পুতুলসহ ৩৫ জনের নামে মামলা করবে দুদক

৪৪৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ

| মঙ্গলবার , ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

সূচনা ফাউন্ডেশন নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দানের নামে ঘুষ আদায় এবং তা আত্মসাতের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ওই ফাউন্ডেশনে অনুদান দিয়ে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছেন। গত বছরের ৫ অগাস্টের পর সূচনা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিল করে। ২৯ জানুয়ারি দুদক ফাউন্ডেশনের অফিসে অভিযান চালায় এবং প্রতিষ্ঠানটিকে অস্তিত্বহীন বলে জানায়। খবর বিডিনিউজের।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুতুলসহ অন্য আসামিরা সূচনা ফাউন্ডেশন নামক কাগুজে প্রতিষ্ঠান গঠন করে এনজিও ব্যুরো ও সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নেন। এরপর তারা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে অনুদানের নামে ঘুষ আদায় করেন এবং সেই টাকা প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় না করে আত্মসাত করেন।

মামলায় ফাউন্ডেশনের ১১ জনকে আসামি করা হচ্ছে। তারা হলেনট্রাস্টি সায়মা ওয়াজেদ, মাজহারুল মান্নান, সাবেক বিসিবি সভাপতি ও এমপি নাজমুল হাসান পাপন, সায়ফুল্লাহ আবদুল্লাহ সোলেনখী, মো. শামসুজ্জামান, জ্যান বারী রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান প্রাণ গোপাল দত্ত, এঙিকিউটিভ কমিটির সদস্য এম এস মেহরাজ জাহান, রুহুল হক, শিরিন জামান মুনির এবং ডা. হেলালউদ্দিন আহমেদ। ব্যবসায়ী আছেন আটজনহামিদ রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান ইন্তেকাবুল হামিদ, সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম, বেঙ্মিকোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি সালমান এফ রহমান, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আজিজ খান, সাবেক এমপি এ কে এম রহমাতুল্লাহ, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দীন হাসান রশিদ, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল এবং বিল ট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এমডি এনায়েতুর রহমানও থাকছেন আসামির তালিকায়। এছাড়া মামলায় আসামি করা হচ্ছে এনবিআরের সাবেক ও বর্তমান ১৬ কর্মকর্তাকে।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রদত্ত অর্থ এবং ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত অর্থ অবৈধভাবে করমুক্তির সুবিধা নিয়ে আত্মসাত করেছেন। তারা পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪৪৭ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার ১৯৩ টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া ২০১৫১৬ করবর্ষ থেকে ২০২৪২৫ পর্যন্ত মোট ৯৯ লাখ ৪ হাজার ৫৩১ টাকা কর জমা না দিয়ে প্রতারণা করেছেন।

দুদক জানায়, সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে খোলা ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৯৩০ কোটি ৯৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৫৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন পাওয়া গেছে।

স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০১৪ সালে গড়ে ওঠা সূচনা ফাউন্ডেশন মানসিক ও স্নায়বিক প্রতিবন্ধিতা, অটিজম এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআহত শিক্ষার্থীদের পাশে চবি উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ায় একদিনে তিন মৃত্যু