চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেছেন, হাটহাজারী থানায় সহযোগিতা চেয়েও পাইনি। অন্য সময়ও পাই না। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার। উনি আমাকে কয়েকবার কল দিয়ে খোঁজ–খবর নিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও চার–পাঁচবার কল করে ক্যাম্পাসের খবর নিয়েছেন। আমার আহ্বানে সামরিক বাহিনীর যারা সাড়া দিয়েছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গতকাল রাত ১১টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করে। এতে উপাচার্য এসব কথা বলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আজকের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আহতদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর। একজনকে ইতোমধ্যে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আমরা সকালবেলা থেকে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করছি। উনাদের জনবল না থাকায় উনারা আমাদেরকে সহযোগিতা করতে পারেননি। পরে আমরা প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার শরণাপন্ন হয়েছি।
শেষ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েনের নির্দেশনা দিয়েছে। তারপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসেছে।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, দেশের যে পরিস্থিতি, এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা পাওয়া অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমাদের উপ–উপাচার্য, প্রক্টরসহ প্রশাসনিক বডির অনেকে আহত হয়েছেন। মামলা করার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আমরা এখনো কোনো মামলা করিনি। তবে আগামীকাল (আজ) আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর উত্তেজিত হওয়ার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না জানানো পর্যন্ত আইন–শৃঙ্খলা বাহিনী ১৪৪ ধারা জারি রাখবে। আজকে রাতে ২ নং গেট এলাকায় থাকা শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা ঠিক করে দেবে। যদি না করতে পারে তাহলে ছাত্র হল ও ছাত্রী হলগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে যারা আহত হয়েছে তাদের চিকিৎসার ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জোবরা এলাকাবাসীর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার জন্য উপ–উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্র প্রতিনিধি, সিনেট সদস্য এসএম ফজলুল হক, জেলা প্রশাসক, ইউএনওসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেন সামনের দিনগুলোতে কোনো সংঘাত না হয়। আগামীকাল (আজ) দুপুর ১টার সময় এই কমিটির প্রথম বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। আমরা আশা করব, এই কমিটির মাধ্যমে আমাদের সাথে জোবরা গ্রামের মানুষের ভালো একটা সম্পর্কে গড়ে উঠবে। এ বিষয়ে আমরা এলাকাবাসীসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আগামীকালের (আজ) সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। বাকি অফিসিয়াল কাজ চলমান থাকবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম, সিনেট সদস্য এসএম ফজলুল হক, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাংবাদিক।











