আমদানি বাড়ায় পাইকারিতে কমছে চালের দাম

বস্তায় কমেছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত প্রভাব কম খুচরায়

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৫ at ৪:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ভারতীয় চালের আমদানির বাড়ার কারণে কমছে সব ধরণের চালের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরণের চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) কমেছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার সম্প্রতি চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। ফলে দেশের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চাল প্রবেশ করেছে। এতে দামও কমছে। একইসাথে দেশীয় চাল মিলগুলোতে চালের উৎপাদ হ্রাস পেয়েছে। ব্যস্ততা না থাকায় অনেক মিলের শ্রমিক কর্মচারীরা এখন অলস সময় পার করছেন। কারণ সবাই এখন ভারতীয় চাল কেনার দিকে ঝুঁকছেন। এদিকে ভোক্তারা বলছেন, পাইকারীতে প্রতি কেজিতে চালের দাম কেজি হিসেবে সর্বোচ্চ ৬ টাকা পর্যন্ত কমলেও খুচরা বাজারে এর কোনো ধরণের প্রভাব এখনো লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা এখনো আগের দরে চাল বিক্রি করছেন। নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বিশেষ করে নাজিরশাইল সিদ্ধ, জিরাশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারীভোগ আতপ চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ৩০০ টাকা কমে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬৫০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ২০০ টাকা কমে ২ হাজার ৮০০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ১০০ টাকা কমে ২ হাজার ৮৫০ টাকা, কাটারিভোগ সিদ্ধ (২৫ কেজি বস্তা) ১৫০ টাকা কমে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা কমে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ টাকা, মিনিকেট আতপ ১০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ (২৫ কেজি বস্তা) ১৫০ টাকা কমে ১ হাজার ৮৫০ টাকা, দেশী নাজিরশাইল সিদ্ধ ১০০ টাকা কমে গিয়ে ২ হাজার টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ২০০ টাকা কমে ২ হাজার ৭৫০ টাকা, বেতী আতপ ২০০ টাকা কমে ২ হাজার ৭০০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ ৫০ টাকা গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪৫০ টাকায়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রাইচ মিলস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভারতীয় চাল আমদানি বাড়ার কারণে উত্তরাঞ্চলের অনেক বড় মিলে এখনো উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কারণ দেশী চালের চাহিদা এখন তেমন নাই। ভারতীয় চালের দাম কম হওয়ায় এখন সবাই ভারতীয় চাল কিনছেন। এভাবে চলতে থাকলে মিলাররা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। শ্রমিক কর্মচারীরা বেকার হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন। দেশী মিলারদেরও কথাও সরকারকে ভাবতে হবে। আমরা চাল আমদানির বিপক্ষে নই, তবে সরকার যেন সীমিত পরিসরে আমদানির অনুমতি দেয়। যাতে দেশী চাল মিল মালিকরাও বাঁচে। কারণ ভারত আমদানির অবস্থা বুঝে যেকোনো সময় তারা রপ্তানিশুল্ক বাড়িয়ে দিতে পারে, অতীতে তারা এই কাজটি করেছে। তখন কিন্তু দেশী মিল মালিকদের ওপরই ভরসা করতে হবে। তাই আমরা চাই সরকার যেন গণহারে আমদানির অনুমতি না দেয়।

জানতে চাইলে পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে এখন প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চাল আমদানি হয়েছে। ভারতীয় চাল আমদানি বাড়ার কারণে দাম কমছে। এছাড়া দেশীয় চালেরও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মোট কথা হচ্ছেসরবরাহ বাড়ার কারণে চালের দাম কমছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে সড়ক অবরোধ করে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
পরবর্তী নিবন্ধআয়কর বিভাগের ২২৫ কর পরিদর্শককে বদলি