মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণ-হত্যা, টেকনাফের যুবকের মৃত্যুদণ্ড

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বুধবার , ২৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৪:৩৯ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে মাহিয়া নামের সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মো. সোলাইমান (৩২) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল২ এর বিচারক মো. ওসমান গণি এ রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে অপহরণ, মৃতদেহ গুমের দায়ে দুইধাপে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দেয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত সোলেমান টেকনাফের হোয়াইক্যং চাকমারকুল এলাকার সৈয়দ করিমের পুত্র। রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল২ বিশেষ পাবলিক প্রসিকউটির মোশারফ হোসেন টিটু।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের অক্টোবরে সোলাইমান মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ নেয়। এরপর নিহত মাহির চাচার বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রীসহ বসবাস করে আসছিল। ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মাহিয়া স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর খেলতে বের হয়। এ সময় বাড়িতে স্ত্রী না থাকার সুযোগে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে অপহরণ করে ভাড়া বাসায় নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে সোলাইমান। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়লে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাগেজের ভেতর ঢুকিয়ে রাতের অন্ধকারে অটোরিকশায় করে পার্শ্ববর্তী পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া এলাকায় লবণমাঠে ফেলে দেয়। এরপর দিনই পুলিশ সোলাইমান ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মতে, মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

কঙবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল২ বিশেষ পাবলিক প্রসিকউটির মোশারফ হোসেন টিটু জানান, এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে জনাকীর্ণ আদালতে বিচারক রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে হত্যা, অপহরণ, মৃতদেহ গুম, মুক্তিপণ দাবিসহ আরো একটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড, দুইধাপে যাবজ্জীবন ও সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

তিনি বলেন, সোলাইমান আগে টেকনাফে তার বিবাহিত স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই ঘটনার পর পলাতক অবস্থায় শিশু মাহিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এ ঘটনাও আমলে রেখে বিচারক পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সোলাইমান একজন সিরিয়ার কিলার হিসেবে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছিল। তাকে এই মুহূর্তে না থামালে এরকম ঘটনা ঘটাতে থাকবে।

রায় ঘোষণাকালে আসামি মো. সোলাইমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এই রায়ে শিশু মাহিয়ার পিতা আয়াত, আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে আসামি পক্ষ জানিয়েছেন, তারা ন্যায় বিচার পাননি। তাই উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে বিদেশি পিস্তল-গুলি উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাসহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা