জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপির প্রতি বিএনপি বিমাতাসুলভ আচরণ করছে বলে দাবি করেছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বিএনপির আগ্রাসী মনোভাব সংস্কার না করলে গণপ্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে দলটিকে। রুমিন ফারহানাকে ইসিতে ধাক্কা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা শেইম ঘটনা।
এ এম এম নাসির উদ্দিনের নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেন। নির্বাচন ভবনকে পার্টি অফিস অভিহিত করে তিনি বলেছেন, ইসি একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকা না পেলে ইসি পুনর্গঠনের দাবি তোলা হবে।
গতকাল বিকালে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ইসির সমালোচনা করে হাসনাত বলেন, আমরা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়ে যাব এবং কমিশনের ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করব। তিনি বলেন, অতীত কাঠামোতে বর্তমান ইসিতে যারা যারা রয়েছেন, তারা পিক অ্যান্ড চুজের ভিত্তিতে নিয়োজিত হয়েছে, নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে। আমরা তাদের ভূমিকাকে সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ বলেছি। আজকে ঘটনায় পুরো বাংলাদেশ যেটি সাক্ষী হয়েছে। এটি মূলত আগামী নির্বাচন কেমন হতে পারে এবং সেখানে এই কমিশনের ভূমিকা কী হবে; বিএনপি কী ভূমিকা রাখবে; পুলিশ কী করবে, সেটি আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
হাসনাত বলেন, নির্বাচন অফিসে যদি এ অবস্থা হয়, সারা দেশে এই বিএনপির যারা রয়েছে, যারা এসব গুন্ডাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, তারা কীভাবে ভোটকেন্দ্র দখল করবে, আজ সেটির টেস্ট ম্যাচ হয়ে গেছে। বিএনপির রুমিন ফারহানকে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী অভিহিত করে এনসিপির এ নেতা বলেন, বিগত ১৫ বছর নাকি উনি অনেক ভালো ছিলেন। উনি অবশ্যই ভালো থাকবেন। কারণ উনি যত ধরনের সুবিধা রয়েছে, সব ধরনের সুবিধা উনি নিয়েছেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এই নির্বাচন কমিশন কতিপয় পার্টির, এটা পার্টি অফিস হয়ে গেছে। আমরা বারবার বলে এসেছি, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে আমরা যেতে চাই। বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আবার গুন্ডাতন্ত্রের দিকে যেতে চায় না। দেশের মানুষ আবার ১/১১ মঞ্চস্থের জন্য অপেক্ষা করছে না।
তিনি বলেন, এ নির্বাচন কমিশনকে বস্তুনিষ্ঠ পেশাদারত্বের ভূমিকায় আমরা দেখতে চাই। নির্বাচন কমিশন যেভাবে দলকানা, একটি দলের প্রতি, একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে যেভাবে নির্লজ্জের মতো কাজ করছে, সেটি আমাদের যে নির্বাচনমুখী আমরা হচ্ছি, সেটির অন্তরায় বলে আমরা মনে করছি। এই কমিশনের প্রতি আমাদের যে আস্থা ছিল তা ক্রমশ ক্ষীয়মাণ। নির্বাচন কমিশনের রিমোট কন্ট্রোল কোথায় রয়েছে, সেটা আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত।
কমিশনারদের উদ্দেশ্য করে হাসনাত বলেন, এই কমিশন পরিচালনা করতে পারবেন না আপনারা। অন্যরা কেউ পরিচালিত করে আপনাদেরক। আপনারা মানুষের সামনে সেটি প্রকাশ করুন। নয়ত নিকট অতীতে আমরা নুরুল হুদা কমিশনকে দেখেছি; তার পরিণতি আমরা দেখেছি। বাংলাদেশের মানুষ আবার কোনো মঞ্চস্থ নির্বাচনের দিকে যেতে চায় না।
তিনি বলেন, আমরা গুন্ডার রাজনীতি ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছি। রুমিন ফারহানারা যদি সেটি আবার বাংলাদেশে ফেরাতে চায়, তাহলে হাসিনার প্রতি তাদের যে আন্তরিকতা, হাসিনা যেখানে আছে, তাদেরকেও সেখানে চলে যেতে হবে।