চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউট কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি চট্টগ্রামবাসীর আত্মপরিচয় ও চেতনাবোধের উৎস। শিল্পী রশিদ চৌধুরীর হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠানকে মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে আমাদের শিল্প পরিচয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চট্টগ্রাম চারুকলা সুরক্ষার আন্দোলন শুধু শিল্পীদের নয়, বরং এটি নগরবাসীর সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও আত্মমর্যাদা রক্ষার সংগ্রাম।
চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউটে ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে ‘শিল্পিত সৃজনে কহিবো কথা, গাহিবো ঐক্যের গান’ স্ল্লোগানকে সামনে রেখে নগরীর শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী সম্মিলন ও আর্ট ক্যাম্প ২০২৫। এতে চিত্রশিল্পী ও নানা মাধ্যমে কাজ করা শিল্পীরা উপরোক্ত কথা বলেন। সম্মিলনে অংশগ্রহণকারীরা চট্টগ্রামে পূর্ণাঙ্গ ও স্বায়ত্তশাসিত চারুকলা ও ললিতকলা বিষয়ে সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। সেই সঙ্গে তারা ঘোষণা করেন, ঐতিহ্যবাহী চারুকলা প্রাঙ্গণকে ক্লাব বা বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার মেনে নেওয়া হবে না। তারা শপথ নেন, চারুকলা বাঁচাও, শিল্প বাঁচাও; ঐতিহ্য রক্ষায় আমরা একসাথে।
চট্টগ্রাম চারুকলা সুরক্ষা সাংস্কৃতিক ঐক্যের আয়োজনে সকাল ১০টায় দিনব্যাপী শিল্প উৎসব উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্রশিল্পী খাজা কাইয়ুম, আবৃত্তি সংগঠক আবদুল হালিম দোভাষ, নাট্যজন শিশির দত্ত, চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শৈবাল চৌধূরী, শিল্পী রওশান আরা রোশনা, লুঘ্র ঢুকে ক্ষী ধর, প্রণব দাশ, আনোয়ার কবির চৌধুরী, বীজন মজুমদার, সুজা উদ্দিন আহমেদ, মনজুর হোসেন, আবেশ কুমার ইন্দু, সন্জীত রায়, মিখাইল মোহাম্মদ রফিক ও ফজলে রাব্বি, নাট্যজন মুনির হেলাল, জোবাইদুর রশীদ, আলোক মাহমুদ, মুহাম্মদ শাহ আলম, সাইফুল ইসলাম, শহীদুল করিম নিন্টু ও মিসফাক রাসেল, নৃত্যশিল্পী শুভ্রা সেন, আবৃত্তিশিল্পী ফারুক তাহের ও সেলিম রেজা সাগর প্রমুখ। তারা সম্মিলিতভাবে আর্ট ক্যাম্প উদ্বোধন করেন এবং ক্যানভাসে লাল–সবুজের রং ছড়িয়ে দেন।
সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আবৃত্তিশিল্পী শ্রাবণী দাশগুপ্তার সঞ্চালনায় বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে উচ্চারক আবৃত্তি কুঞ্জ, একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন কঙ্কন দাশ, প্রণব চৌধুরী, মুজাহিদুল ইসলাম, সেলিম রেজা সাগর, দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল ড্যান্স, সঞ্চারী নৃত্যকলা ও নটরাজ নৃত্যকলা একাডেমি। একক সংগীত পরিবেশন করেন অপু বর্মন, মো. শাহ জাহান ও লিটন নন্দি। একক অভিনয় পরিবেশন করেন নাট্যশিল্পী সাইফুল ইসলাম।ক্যাপ