হাসি মানুষের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ

টম্পী ভৌমিক | শনিবার , ২৩ আগস্ট, ২০২৫ at ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীতে মানুষের জীবনটা সমস্যায় ভারাক্রান্ত ও যন্ত্রণাকাতর। তাকে বাধ্য হয়ে চিত্তবিনোদনের নিমিত্তে হাসির খোরাক আবিষ্কার করতে হয়। হাসি মানুষের জন্য তথা মানবজীবনের জন্য এক অমূল্য সম্পদ যা মনে প্রফুল্লতা জোগায়। শেক্সপিয়ারের ভাষায় ‘হাসি আর কাজ সময় সংক্ষিপ্ত করে।’ যে মানুষের হাসি নাই, তার সাথে যন্ত্রের কোন পার্থক্য নেই। তাই স্রষ্টার দেওয়া এই হাসি মানুষের জন্য এক আশীর্বাদ স্বরূপ। হাসি মানুষের অন্তরের সুন্দর অভিব্যক্তি ও মনের দর্পণ। নির্মল হাসি গৃহে সূর্য কিরণের মতো। তাই হাসিহীন জীবন যেমন বিড়ম্বনাপূর্ণ, তেমনি হাসিহীন পৃথিবীও নিরেট গদ্যময়। তাই বলা হয়, দেহের খোরাক খাদ্য, মনের খোরাক অর্থপূর্ণ সুন্দর হাসি।

মানবজীবনে যে কত রকমের হাসি আছে তার কোন ইয়ত্তা নাই। যেমন : মায়ের মুখের শান্তির হাসি, প্রেমের হাসি, শিশুর হাসি, সুন্দরী নারীর হাসি, ব্যঙ্গাত্মক হাসি, কপট হাসি, বোকার হাসি, মনখোলা হাসি, গম্ভীর হাসি, বিরক্তিকর হাসি, বুদ্ধিমানের হাসি, কৌতুক হাসি, অর্থহীন হাসি, আবেগের হাসি ইত্যাদি। এই সব হাসির মধ্যে শিশুর কোমল মুখের পবিত্র নির্মল হাসি কার না ভালো লাগে?

হাসিকে আমরা যতটা হালকা মনে করি, হাসি ততটা হালকা নয়। হাসির অনেকটা উপকারী দিক রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, হাসি শুধুমাত্র আবেগের অর্থহীন বহিঃপ্রকাশ নয় বরং মানুষের শরীরের জন্য চিকিৎসাও বটে। তাদের মতে, প্রাণঢালা হাসি মানুষের দেহের জন্য সুশৃঙ্খল ব্যায়াম স্বরূপ। এতে পেট, বুক, কাঁধসহ শরীরের অন্যান্য অংশের মাংসপেশি সংকুচিত হয়। হার্টের স্পন্দন ও রক্তচাপ বাড়ে। মানুষের দেহের জন্য হাসির উপকারিতা জগিং বা দৌড় ব্যায়ামের মতই। দীর্ঘায়ুর সাথে হাসিখুশি নানাভাবে সম্পর্কিত। হাসি দেহমনের উপর অতিরিক্ত চাপ কমায় এবং মানসিক উত্তেজনার উপসম ঘটায়। কারণ প্রফুল্লতাই স্বাস্থ্য আর এতেই মানুষের আয়ু ও কর্ম স্পৃহা বাড়ে। যে হাসে সে বেশিদিন বাঁচে। হাসি রোগ আরোগ্য নাও করতে পারে কিন্তু ব্যথা লাঘব করে। তবে একথা ঠিক যে, স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে হাসা উচিত। অহেতুক হেসে অন্যের হাসির খোরাক হয়ে লাভ নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআকাশে শুভ্র মেঘের ভেলা
পরবর্তী নিবন্ধভাইরাল