পুতিন বৈঠকে রাজি না হলে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া প্রতিক্রিয়া চান জেলেনস্কি

| শুক্রবার , ২২ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:১১ পূর্বাহ্ণ

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্‌লাদিমির পুতিন তার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে রাজি না হন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া চান তিনি। খবর বিডিনিউজের।

বুধবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন জেলেনস্কি, জানিয়েছে রয়টার্স। যুদ্ধরত ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি স্থাপনের চেষ্টায় মধ্যস্থতা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে ও পরে সোমবার ওয়াশিংটনে জেলেনস্কি ও সাত ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকের পর ট্রাম্প জানান, এই যুদ্ধ বন্ধে পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি বৈঠক হওয়া দরকার আর তিনি এই বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন। প্রয়োজন হলে বৈঠকে তিনি নিজেও উপস্থিত থাকবেন। ট্রাম্প আহ্বান জানালেও এবং জেলেনস্কি প্রস্তুত থাকলেও পুতিন ও ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাবটিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না ক্রেমলিন। উর্ধ্বতন রুশ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মন্তব্য থেকে এমন ধারণা পাওয়া গেছে। পরে ট্রাম্পও জানিয়েছেন, পুতিন চুক্তি করতে আগ্রহী নাও হতে পারেন। এমন পরিস্থিতি সামনে রেখে ওই সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ওই প্রস্তাবে আমি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দিয়েছি। আমরা প্রস্তুত। কিন্তু রুশরা যদি প্রস্তুত না থাকে তাহলে কী হবে? এরপর তিনি বলেন, রুশরা যদি প্রস্তুত না থাকে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে একটি কড়া প্রতিক্রিয়া দেখতে চাইবো। রয়টার্স লিখেছে, সমপ্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিন ও জেলেনস্কির পৃথক বৈঠক এবং ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শান্তির পথ এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে। এই সম্ভাব্য শান্তি চুক্তিতে কিয়েভকে কী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে তা নিয়ে ওয়াশিংটন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা কাজ করছে। জেলেনস্কি আরও বলেছেন, যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে মস্কো ভূখণ্ডের বিষয়ে কী ছাড়া দিতে ইচ্ছুক তাও পরিষ্কার হয়নি। ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, শান্তি চুক্তিতে পৌঁছার জন্য ইউক্রেন এবং রাশিয়া দুই পক্ষকেই কিছু ভূখন্ড ছাড় দিতে হতে পারে। এরপর গত শুক্রবার ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে শীর্ষ বৈঠকে রাশিয়া প্রেসিডেন্ট যেসব প্রস্তাব দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে ভূমি বিনিময়ের কথাও ছিল বলে খবর হয়েছে। ওই বৈঠকের পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, মস্কোর প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া যেখানে আছে সেখানেই থামার প্রতিশ্রুতি দেবে। বিনিময়ে পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল থেকে কিয়েভকে তার বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে। আর ইউক্রেইনের উত্তরাঞ্চলীয় সুমি ও উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় খারকিভে তুলনামূলক ছোট ছোট যে এলাকাগুলো রুশ বাহিনী অধিকার করে আছে রাশিয়া সেগুলো ফিরিয়ে দেবে। তবে পুতিন এসব প্রস্তাব দিয়েছেন কি না, তা মস্কো বা ওয়াশিংটন আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।

জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন কী করতে ইচ্ছুক তা নিয়ে আলোচনার আগে রাশিয়া কী করতে ইচ্ছুক আগে তা শোনা যাক। আমরা তা জানি না। ওয়াশিংটনে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর মার্কিন প্রশাসনের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, পুতিন ও জেলেনস্কির বৈঠক হাঙ্গেরিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে। জার্মানির চ্যান্সেলল ফ্রিডরিশ মের্ৎস আভাস দিয়েছিলেন, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই এই দুই নেতা বৈঠকে মিলিত হতে পারেন। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে রাশিয়াইউক্রেনের সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকের বিষয়ে প্রশ্নে জেলেনস্কি বলেছেন, এটা কঠিন হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে হাঙ্গেরি রাশিয়া ঘনিষ্ঠতম মিত্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি বৈঠকের আয়োজক হতে হাঙ্গেরি দুইবার প্রস্তাব দিয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআলাস্কায় বিমানে জ্বালানি ভরতে পুতিনকে কেন নগদ অর্থ দিতে হয়েছিল?
পরবর্তী নিবন্ধমানবিক বিচারক ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিওর জীবনাবসান