জীবন এক সাদা ক্যানভাস —হৃদয়–তুলি, অনুভবের জলরঙ আর স্মৃতির বর্ণিল আঁচড়ে অঙ্কিত একেকটি দিন। জীবনে কখনো কখনো পুনর্লিখন দরকার– ছায়ামঞ্চের স্মৃতির জঞ্জাল ঝেড়ে যেখানে– জায়গা করে নেবে আলোয় ভরা ভালোবাসারা। চৈত্রানলের শান দেওয়া রুদ্র কিন্তু স্নিগ্ধ শান্তিময় এক প্রহরে– কংক্রিটের ক্লান্ত শহরে, ধোঁয়ার চাদরে মোড়ানো হাওয়ায়– ব্যালকোনির টবে ফুটে থাকা একাকী গোলাপটি চুপিচুপি বলে ওঠে– রঙ হারায় না, শুধু চোখের ধুলো ঝাড়তে হয়। ভোরের রোদ যেন অন্ধকার কাটিয়ে নিয়ে আসে সার্থকতার প্রতিশ্রুতি। অনুভবে প্রশান্তি নামে লেবুপাতার সুগন্ধ ভরা এক কাপ চা‘য়ে, হারানো সময়ের ঘ্রাণে। তখন বুঝি–তৃপ্তি আসলে অনুভবের ছোঁয়ায় জন্ম নেয়। মধ্যরাতে টিনের চালে বৃষ্টির টুপটাপ শব্দে– জানালার ওপাশে ঘন হয়ে ঝরে নীরবতা, তবু তারাই ভোরের আলোর মুক্তো হয়ে লেগে থাকবে ভেজা ঘাসের গায়ে। প্রতিদিনের তালকাটা ছন্দে পূর্ণ নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকাই– জীবন আসলে এক গ্রীষ্মের দুপুরবেলায় শীতল জলের কলস।
বেদনার ধুলো ধুয়ে যায় এভাবেই হৃদয়পটে, রাতের নিস্তব্ধতায় বালিশের পাশের বইয়ের ভাঁজে ডুবে গিয়ে বুঝি হারিয়ে যাওয়াও হতে পারে ফিরে আসা অনুভূতিগুলো ফিসফিস অস্ফুটস্বরে যেন বলে-‘আমি তো এখানেই আছি‘!
অগোছালো মন রচে এলোমেলো সম্পর্ক– জেনেছি। এক চিমটি বোঝাপড়া, পরস্পরের প্রতি নির্ভরতার একেকটি চুমুক দিয়েই বুনে ফেলা যায় জীবনের সবচেয়ে আরামদায়ক আশ্রয়। সযত্নে সাজানো নতুন স্বকীয় রঙে সেজে উঠে জীবন অনেকটা জলসিঞ্চিত একটি টবের মতো।
বিষণ্নতার কপাট খুলি না আর জানালায় টাঙাই মখমল রোদের আলো – ঘরে বাজে নরম সুর, প্রিয় কারো কণ্ঠে গুনগুন করে এক অদ্ভূত সুর– অচেনা হলেও যার প্রতিটা নোটে থাকে এক চেনা অনুভব।