অরুণ মিত্র : কবি ও অনুবাদক

| শুক্রবার , ২২ আগস্ট, ২০২৫ at ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ

অরুণ মিত্র (১৯০৯২০০০)। রবীন্দ্রোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি ও অনুবাদক। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা নভেম্বর বাংলাদেশের যশোর শহরে কবি অরুণমিত্র জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হীরালাল মিত্র ও মায়ের নাম যামিনীবালা দেবী। অল্পবয়সেই অরুণমিত্র কলকাতায় পাড়ি জমান। কলকাতার বঙ্গবাসী স্কুলে তার শিক্ষাজীবনের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে রিপন কলেজ থেকে ডিস্টিংশন সহ বিএ পাস করেন। এই সময়েই ভিক্টর হুগোর উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ পড়ে ফরাসি সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ফরাসি ভাষা শিখতে শুরু করেন। বিএ পাস করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পড়া শুরু করেন। কিন্তু পারিবারিক কারণে এমএ পড়া অসমাপ্ত রেখেই ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি গ্রহণ করতে বাধ্য হন। আনন্দবাজার ত্যাগ করার পর তিনি যোগ দেন সতেন্দ্রনাথ মজুমদার সম্পাদিত অরণিপত্রিকায়। ফরাসি সরকারের আহ্‌বানে ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে বৃত্তি গ্রহণ করে গবেষণার্থে ফ্রান্স যাত্রা করেন। প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট লাভ করেন। ফরাসি সাহিত্য অধ্যয়নের পর ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফিরে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপনা করেন। এরপর দীর্ঘ কুড়ি বছর সপরিবারে এলাহাবাদেই বসবাস করেন।

১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করে ফিরে আসেন কলকাতায়। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানিক ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যে নিরন্তর গবেষণার জন্য ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি সরকার তাকে লিজিয়ন অফ অনারসম্মানে ভূষিত করে। তাঁর কাব্যগ্রন্থের নাম : প্রান্তরেখা (১৯৪৩), উৎসের দিকে (১৯৫৭), ঘনিষ্ঠ তাপ (১৯৬৩), মঞ্চের বাইরে (১৯৭০), শুধু রাতের শব্দ নয় (১৯৭৮), প্রথম পলি শেষ পাথর (১৯৮০), শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৮৫)। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় একমাত্র উপন্যাস ‘শিকড় যদি চেনা যায়’। মৌলিক প্রবন্ধ নিয়ে ‘ফরাসী সাহিত্য প্রসঙ্গে’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে। তাঁর অনেক অনুবাদ গ্রন্থও রয়েছে। তিনি ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ‘শুধু রাতের শব্দ নয়’ কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার এবং ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে ‘খুঁজতে খুঁজতে এতদূর’ গ্রন্থের জন্য সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ২২ শে আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধপথশিশু নিয়ে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ জরুরি