ক্রিকেটারদের সাথে খোলামেলা আলোচনা বোর্ড পরিচালকদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ২০ আগস্ট, ২০২৫ at ১২:৪৮ অপরাহ্ণ

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে করলেন এক ব্যাতিক্রমী আয়োজন। যেটির নাম দিয়েছেন ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার।’ কিছুদিন আগেই বোর্ডের পক্ষ থেকে ক্রিকেটারদের মধ্যে একটি জরিপ আয়োজন করা হয়েছিল তাদের সুযোগসুবিধা, সমস্যা, আশা, এরকম নানা কিছু নিয়ে। সেটির প্রেক্ষিতেই আরও বিশদ আলোচনার জন্য ছিল এই আয়োজন। আলাদা একটি সেশন ছিল বিসিবি দুর্নীতি দমন বিভাগের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত পরামর্শক অ্যালেক্স মার্শালের সঙ্গেও। যুক্তরাজ্য পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা আইসিসি ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি সভাপতি জানালেন তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু। তিনি বলেন আজকে দুটি বড় বড় কাজ করেছি আমরা। জাতীয় দলের যারা ক্রিকেটার আছে, লাল ও সাদা বলে খেলছে, পাশাপাশি আমাদের সাপোর্ট স্টাফ, কোচরা যারা আছেন, সবাই একত্রিত হয়েছিলাম। বোর্ডের পরিচালকরা সবাই এখানে ছিলেন। প্রোগ্রামটির নাম ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার।’ আমরা মনে করি, যে দলটা মাঠে খেলে, সেটা আমাদের একটি দল। যে দলটি ডাগ আউটে বসে থাকে, তারা একটি দল। আর আমরা যারা বোর্ডে কাজ করি, তারা একটি দল। তিনটি দলের সত্যিকারের পারফরম্যান্স কী সেসব আলোচনা হয়েছে।

আমরা তাদেরকে ৮টি প্রশ্ন করেছিলাম। ৮টি প্রশ্ন করার পর তারা আমাদের কাছে ফিরে এসেছে। সেগুলোর আমরা ডেটা অ্যানালাইসিস করেছি। অ্যানালাইসিস করে তাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি। আমাদের যে উন্নতির জায়গাগুলো আছে, কীভাবে আমরা আরও ভালো করতে পারি। আরেকটা সেশন ছিল ইন্টেগ্রিটি ইউনিটেন সাথে। আমাদের দেশের ক্রিকেট সুরক্ষার জন্য কী কী করণীয়, সেই লক্ষ্যে এই কাজটি আমরা সিরিয়াসলি নিয়েছি। আমাদের চার্টারের মধ্যে আছে, ‘ইন্টেগ্রিটি অব দিস গেম।’ এখানে ‘ইন্টেগ্রিটি’ বলতে, কীভাবে আমরা খেলাটিকে সুরক্ষা দেব, এখন ডোপিং একটি বড় ব্যাপার, আমাদের জাতীয় দল শুধু দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বা আইসিসি ইভেন্ট খেলছে না, এশিয়ান গেমসে খেলছে, একদিন অলিম্পিকসে খেলবে। অ্যান্টি ডোপিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ, নিজেকে সুরক্ষিত রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণৃ। সেজন্য অনেক অভিজ্ঞ একজন, আইসিসির সাবেক মহাব্যবস্থাপক অ্যালেক্স মার্শাল এখানে আছেন। তার কাছ থেকে আমরা দিকনির্দেশনা পেয়েছি, এই বহুল জনপ্রিয় খেলাটাকে আমরা কীভাবে সুরক্ষিত রাখতে পারি। তিনি আমাদেরকে ধারণা দিয়েছে, কীভাবে আমাদের (ইন্টেগ্রিটি) দলটি তৈরি করতে হবে। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ তো নিয়মিতই হয়। বিসিবির জরিপের মাধ্যমে ও এ দিনের সভায় ক্রিকেটাররা খতিয়ে দেখেছেন বোর্ডের পারফরম্যান্স। এই ধরনের বৈঠক নিয়মিত বিরতিতে হবে বলে জানালেন বোর্ড সভাপতি। ক্রিকেটাররা তো মাঠে খেলে, আমরা তাদেরকে কতটা সাহায্য করছি, সেই সাহায্য করার জন্য এই মুহূর্তে কতটুকু গ্যাপ আছে, গ্যাপটা কবে ও কীভাবে পূরণ করতে পারব যাতে ক্রিকেটাররা মাঠে নিশ্চিন্তে খেলতে পারেৃ। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রতি তিন মাসে একবার করে এরকম বৈঠক করব এবং আমাদের দিক থেকে খেলার যে জায়গাটি আছে, মানে উন্নতির জায়গাগুলো যা আছে, সেগুলো আমরা কীভাবে কাটিয়ে উঠে ওদেরকে সাহায্য করব। বিসিবি সভাপতি বলেন মজার ব্যাপার হলো, আমাদের যে এজেন্ডা ছিল, এর বাইরেও ক্রিকেটাররা মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে কথা বলছিল। মনের কথাগুলো প্রকাশ করছিল। এটিই সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার। মনে হচ্ছিল যে আমরা সবাই একটি টিম এবং দল হিসেবে কাজ করলে যে আমরা কত সামনে এগিয়ে যেতে পারব, তার একটি বড় প্রতিচ্ছবি আমরা আজকে দেখেছি।

ক্রিকেটাররা তাদের মতামত দিয়েছে। আলোচনা শেষে তৃপ্ত বিসিবি সভাপতি বললেন, বিশ্বসেরাদের উচ্চতায় পৌঁছানোর বিশ্বাস ক্রিকেটারদের মধ্যে গেঁথে দিতে পেরেছেন তিনি।

ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কীভাবে আমরা পারফরম্যান্স আরও ভালো করতে পারি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, একেকজন ক্রিকেটার একেকটি বিশাল পাওয়ার হাউজ। তারা কীভাবে বিশ্বসেরা ক্রিকেটার হতে পারবে, সেই বিশ্বাস তাদেরকে দেওয়া হয়েছে এবং সেটা আলোচনা হয়েছে। বিসিবি সভাপতি জানালেন, নারী দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গেও খুব দ্রুত এই ধরনের বৈঠকে বসবেন তারা। আগামী মাসের বিশ্বকাপে চোখ রেখে নিগার সুলতানারা প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট খেলছেন বিকেএসপিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাফি স্মৃতি টেবিল টেনিস টুর্নামেন্ট শুরু
পরবর্তী নিবন্ধক্রিকেটারদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার কমানোর পরামর্শ বিসিবির