চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারের বেতার বার্তা ফাঁস, পাচার ও প্রকাশের অভিযোগে অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে দায়ের হওয়া মামলায় কনস্টেবল অমি দাশের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। তিনি খুলশী থানায় বেতার কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে অমি দাশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হলে শুনানি শেষে বিচারক পুলিশ সদস্য অমি দাশের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সিএমপি কমিশনারের বেতার বার্তা ফাঁস, পাচার ও প্রকাশের অভিযোগে গত সোমবার অমি দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন, ১৯২৩ এর ৩(খ)ধারা ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর ২৩(২)/২৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন খুলশী থানার এসআই লুৎফর রহমান সোহেল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, কিছুদিন ধরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কর্মী এবং দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসীরা দেশব্যাপী সন্ত্রাসীমূলক কার্যক্রম পরিচালানার মাধ্যমে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতির জন্য বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সিএমপিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের আক্রমণ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল ভঙ্গ করে জনমনে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় নগরীর বন্দর থানাসহ বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের আক্রমণ করে জখমসহ হত্যা চেষ্টা চালিয়েছে। তাদের এধরণের সন্ত্রাসী কার্যকালাপ প্রতিহত, নগরীর আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও পুলিশ সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধির স্বার্থে সিএমপি কমিশনার গত ১২ আগস্ট সন্ধ্যায় বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে সিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্তে বিভিন্ন কৌশলগত পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান কারেন। উক্ত সময়ে আসামি অমি দাশ খুলশী থানার প্রবেশ গেইটের সিঁড়িতে অবস্থানরত অবস্থায় তার হাতে থাকা বেতার যন্ত্রে পুলিশ কমিশনারের উক্ত প্রচারিত বার্তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে অসৎ উদ্দেশ্যে ও অনধিকারে ভিডিও রেকর্ডিং করেন।
এজাহারে বলা হয়, পরবর্তীতে একই দিন রাতে ধারণকৃত ভিডিও রেকর্ডিং অজ্ঞাত সহযোগীদের সহায়তায় নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম গতিশীল করার হীন উদ্দেশ্যে উক্ত ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ছড়িয়ে দেওয়া ভিডিও প্রিন্ট, ইলেক্ট্রিক মিডিয়া ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। যাতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ কমিশনারের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গৃহীত কৌশলগত আভিযানিক পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়।