চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের পূর্ব গুনাগরী এলাকার খালেদা বেগম সেলাই কাজ করে স্বাবলম্বী,পাশাপাশি হয়ে উঠেছেন আশপাশের নারীদের অনুপ্রেরণা। সেই বিগত ১৭ বছর আগে নিজের আগ্রহে শিখেছিলেন সেলাই কাজ। প্রথম তিনি নিজের কাজগুলো করতেন চর্চার জন্য। সংসারের কাজকর্ম সেরে তিনি বসে পড়েন সেলাই কাজে। তাঁর এই কাজ দেখে তাঁর বাসায় আশপাশের নারীরা সেলাই করানোর জন্য কাপড় নিয়ে আসেন তাঁর কাছে।
নারীদের থ্রি-পিস, ব্লাউজ, পেটিকোটসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক ইত্যাদি সেলাই করেন। বাজারে যে দামে মেয়েরা জামা কাপড় সেলাই করতেন তার চেয়ে কিছু কম দামে তিনি সেলাই করতেন। অপরদিকে তাঁর সেলাইয়ের হাত ভালো হওয়ার ফলে অনেকে তাঁর কাছে ছুটে আসতে থাকেন সেলাই করার জন্য। গ্রামের নারীরা বর্তমানে বাজারে পুরুষ দর্জির কাছে না গিয়ে খালেদা বেগমের কাছে আসেন তাদের জামা-কাপড় সেলাই করার জন্য। কারণ তারা তার কাজে সন্তুষ্ট এবং স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
বর্তমানে খালেদা বেগম সেলাই সেলাইয়ের পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহর থেকে পাইকারি থান কাপড় ও থ্রি-পিস এনে বিক্রির পাশাপাশি সেলাই করেন ছোট থেকে বড় শিশুদের পোশাক। খালেদা বেগমের বিয়ের দুই বছরের মাথায় তার সাংবাদিক ও ক্রীড়া সংগঠক স্বামী মোহাম্মদ এরশাদ তাকে একটি সেলাই মেশিন কিনে দেন, যেটি তার আত্মনির্ভরতার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। খালেদা বেগম শুধু নিজে সেলাই করছেন না, বরং এই কাজ শেখাচ্ছেন আশপাশের প্রতিবেশিদেরও। এতে তারা নিজেরাও আয় করতে পারছেন।
এই প্রসঙ্গে খালেদা বেগম বলেন, ‘আগে যেকোন দরকারে টাকা লাগলে স্বামীর কাছ থেকে টাকা চাইতে হতো এখন আর চাইতে হয় না বরং স্বামীকে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করি। তিনি আরো বলেন, আমার আয়ের অর্থ দিয়ে ইনশাআল্লাহ একটি একতালা দালান ঘর নির্মাণ করতেছি। এছাড়াও স্বামী কিনে দেওয়া সেলাই মেশিন ছাড়াও আবার নতুন করে আর একটি সেলাই মেশিন, কাপড় ইস্ত্রি দেওয়ার মেশিন, লক মেশিন কিনেছি। তবে এই সব কিছু পিছনে যায় সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল তা হলো আমার সাংবাদিক স্বামীর অবদানের ফলে। তিনি সাহস না যোগালে আমার এতদূর আসা কখনো সম্ভব হতো না।
এখন আমি আগের অবস্থা থেকে অনেক ভালো আছি এখন আমার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। সারাদিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এই ছোট উদ্যোগ থেকেই তৈরি হচ্ছে বড় অনুপ্রেরণা, যার মাধ্যমে বদল ঘটছে তার জীবনের। ভবিষ্যতে এই কাজকে আরও এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন খালেদা বেগমের দু’চোখে।