খাতুনগঞ্জে চিনির কেজি নামল ১শ টাকার নিচে

বাজারে পর্যাপ্ত চিনি, দাম আরো কমতে পারে

জাহেদুল কবির | মঙ্গলবার , ১৯ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে দীর্ঘ সময় পর প্রতি কেজি চিনির দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। আওয়ামী সরকারের আমলে গুটিকয়েক চিনি ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মি ছিল বাজার। ফলে পাইকারীতে চিনির দাম কখনো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা নিচে নামেনি। এখন চিনির আমদানি উন্মুক্ত হওয়ায় যেকোনো ব্যবসায়ী আমদানি করতে পারছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চিনির পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে তাই দামও কমছে।

গতকাল সোমবার খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ আগে খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে মণপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। বর্তমানে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫৭০ টাকায়। পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ৯৫ টাকা।

চিনি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশের শিল্পগ্রুপ ছাড়াও এখন ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকে চিনি আমদানি করছেন। আমদানি উন্মুক্ত হওয়ায় চিনির দাম কমতে শুরু করেছে। এদিকে পাইকারী কমলেও খুচরা বাজারে এখনো চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৩ থেকে ১০৫ টাকায়। অর্থাৎ পাইকারীর তুলনায় ১০ টাকা পর্যন্ত বেশি।

নগরীর দামপাড়া এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রানা বলেন, আমরা প্রতি কেজি ১০৫ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারীতে প্রতি নিয়ত পণ্যের দাম উঠানামা করে। সেখানে বাজারটা সেভাবে নির্ধারিত হয়। আমরা অল্প অল্প চিনি এনে বিক্রি করি। বলা যায়, সীমিত লাভে চিনি বিক্রি করে থাকি।

জানা গেছে, খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজারে আসার আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও বিক্রি করে। যে দরে ডিও বিক্রি হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্য ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যের তুলনায় ডিও বিক্রিও হয় বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চিনির সরবরাহ বাড়ার কারণে দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। পাইকারী বাজারে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। সাধারণত চিনির দাম বাড়লে সিন্ডিকেটের কারসাজির অভিযোগ উঠে। আসলে শুধু চিনি নয়, ভোগ্যপণ্যের দাম উঠানামা করে চাহিদা ও যোগানের ওপর। এখন সরবরাহ বেড়েছে তাই দাম কমছে।

ইমাম হোসেন নামের একজন ভোক্তা জানান, চিনির বাজার আগে কিছু প্রভাবশালী শিল্পগ্রুপের হাতে জিম্মি ছিল। এখন সেই জিম্মি দশা কেটেছে। তাই দাম কমছে। এছাড়া আগে আমদানির পরিবেশ ছিল না। বর্তমান সরকার সাধারণ ব্যবসায়ীদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএমপি কমিশনারের বেতার বার্তা ফাঁসের ঘটনায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাই ও লোহাগাড়ায় পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু