দীর্ঘ ১০ ঘন্টা পর কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আস্তে আস্তে উভয় পার্শ্বে আটকা পড়া যানবাহন গুলো নিজেদের গন্তব্যে ছুটে যাচ্ছে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা কাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধের ডাক দেন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাত ৭ টা থেকে বিকাল চার টা পর্যন্ত কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের কোটবাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন।
স্থানীয় শিক্ষকদের প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম শামীম বলেন, আমরা দাবি করছি, চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের পুনর্বহাল করা হোক এবং ক্যাম্পে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হউক। জানা যায়, অবরোধের কারনে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। যা কারনে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আন্দোলন করবেন ঠিক। তবে জন দুর্ভোগ হয় এমন আন্দোলন কাম্য নই।
নারী শিক্ষক অন্তি ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকুরী করেছি। চাকুরী চলে যাওয়ার কারনে আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।
স্হানীয় যুবক ইউসুফ বলেন, বহিরাগত ও রোহিঙ্গাদের চাকুরী থেকে বাদ দিতে হবে। প্রচন্ড রোদের কারনে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অবরোধ চলাকালীন য্যাব-পুলিশ-সেনাবাহিন ঘটনাস্থলে উপস্থিতি ছিলেন।
দুপুর একটার দিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার সাইফুদ্দিন ঘটনাস্হলে আসেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশ সুপারের সাথে স্বাভাবিক বিষয় নিয়ে কথা হয়। এসময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেছেন দেড়শ শিক্ষক নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কোন এনজিও নিবে জানা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও উখিয়া থানা পুলিশের একাধিক দল সর্তক অবস্থানে ছিলেন।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন শান্তিপূর্ন শেষ হয়েছে। তবে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আন্দোলনকারী শিক্ষক রোমানা আক্তার বলেন, এনজিও সংস্থাগুলো দিনের পর দিন স্থানীয় শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্য করে আসছিল, পরে তারা বিনা কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত ১২৫০ জন শিক্ষককে ছাঁটাই করেন। এ ঘটনার পরে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে এর আগেও আন্দোলনে করেছিলাম। পরে এনজিও সংস্থা বা প্রশাসনের কর্মকর্তারা আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও এই পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আবারো আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
আন্দোলন চলাকালীন গাড়িতে আটকে পড়া রহিম উল্লাহ নামে এক যাত্রী বলেন, স্থানীয় শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ে
আন্দোলনে করছেন, এ ঘটনায় আমরা আটকা পড়ে আছি। অনেক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। জরুরি কাজেও যেতে পারছি না।
কক্সবাজার জেলা সমন্বয়ক জিনিয়া শারমিন বলেন, চলমান আন্দোলনে সংশ্লিষ্টদের রাজপথে এসে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় শিক্ষকদের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন কাল মঙ্গলবার কক্সবাজারের হবে।
উখিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল হাসান চৌধুরী মুঠোফোন রিসিভ না করার কারনে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও পরিচালিত শিক্ষা প্রকল্প থেকে ১ হাজার ২৫০ শিক্ষককে ছাঁটাই করা হয়। এরপর ১ জুন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন। সে সময় চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা। আড়াই মাস পার হলেও চাকরি ফিরে না পাওয়ায় আবারো সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষকরা।