দেশে এখন জাতীয় পার্টিকে দরকার : আনিসুল ইসলাম

| রবিবার , ১৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টিকে দরকার বলে মনে করছেন দলটির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়ে এসেছে, অর্থনীতি স্থবির হয়ে আছে। সুতরাং, আমরা মনে করি আজকে জাতীয় পার্টিকে দরকার। জাতীয় পার্টির একটা ভবিষ্যৎ আছে। জনগণের কাছে আমাদেরকে যেতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বাদ দিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা গত ৯ আগস্ট কাউন্সিল করে; যাকে তারা দলের ‘দশম কাউন্সিল’ বলছেন। সেখানে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান ও রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নির্বাচন করা হয়। দলের সাম্প্রতিক কার্যক্রম তুলে ধরতে গিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, পার্টির প্রেসিডিয়াম মিটিংয়ে আমরা কিছু বক্তব্য তুলে ধরেছিলাম। যার মধ্যে ছিল পার্টির গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গঠনতন্ত্রের ২০ এর ১ () ধারা, সেটার বিলুপ্তিকরণ। নোটিস ছাড়া কাউকে যেন পার্টি থেকে বের করে না দেয়। অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা, আমাদের পার্টির যে চাঁদা বলেন, নানা খাতে খরচের একটা স্বচ্ছতার কথা সেখানে বলা হয়েছিল। আরেকটি ছিল যে, আমরা চেষ্টা করব, আমাদের জাতীয় পার্টি থেকে যারা চলে গেছেন বিভিন্ন বিভক্তির কারণে, তাদের সকলকে জাতীয় পার্টিতে ফিরিয়ে আনা।

ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এর একটা প্রধান কারণ হচ্ছে গতবছর পাঁচই আগস্টে পটপরিবর্তনের পরে আমি মনে করি আজকে রাজনীতিতে একটা বড় পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতার পরে আমাদের অভ্যন্তরীণ কোনো আন্দোলনে এত লোক মারা যায়নি। এর পরে স্বাভাবিকভাবে আমাদের একটা চিন্তা এসেছে যে, দেশে একটা বড় পরিবর্তন আসবে। এই জীবনগুলো বৃথা যেতে পারে না। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পার হলেও অনিশ্চয়তা কাটেনি মন্তব্য করে প্রবীণ রাজনীতিক আনিসুল ইসলাম বলেন, পাঁচই আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। তারা দেশ চালাচ্ছে। কিন্তু আজকে বলতে বাধ্য হচ্ছি, দেশ আজকে এক বছর পরেও অনিশ্চয়তা থেকে উত্তরণ পায়নি। তাই আমরা মনে করেছি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের সামনে আসতে পারলে, আমার মনে হয়, আমরা হয়ত জাতিকে কিছু দিতে পারব এবং জনগণও আমাদের গ্রহণ করবে। মানুষ কেন জাতীয় পার্টিকে গ্রহণ করবে, তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, কারণ, আমাদের যে সাড়ে নয় বছরের শাসন, সেখানে আজকে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, এই সংস্কারের অনেকগুলো আমরা করেছিলাম বা করতে চেষ্টা করেছি। এরশাদ সরকারের আমলে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আনিসুল ইসলাম বলেন, এই দেশের উন্নয়নকে যদি সত্যিকারভাবে এটাকে কেউ পরীক্ষা করে দেখে, তখন দেখবে আমাদের জাতীয় পার্টির সাড়ে নয় বছরে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন আমরা করেছি। তিনি বলেন, আমরা মনে করি বর্তমানে ক্ষমতা দখলের একটা প্রতিযোগিতা চলছে; কীভাবে ক্ষমতা দখল করা যায়। আমাদের এই যে দেড় হাজার ছেলেমেয়ে তাদের রক্ত দিয়েছে, তাদের জীবন দিয়েছে এটা কি কোনো একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে ক্ষমতায় আনার জন্য? কেবল ক্ষমতা বদলের জন্য? শিগগিরই নির্বাচন চাইলেও যেনতেন নির্বাচন চান না জানিয়ে আনিসুল বলেন, আজকে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেই সংস্কার সম্ভব একটা নির্বাচিত সংসদে। সুতরাং যত শিঘ্রই সম্ভব, আমরা সংসদ নির্বাচন চাই। তবে এখানে একটা কথা আছে। যেকোনো রকমে একটা নির্বাচন করে দেওয়া, সেই নির্বাচন আমরা চাই না। তিনি বলেন, আমরা চাইসেই নির্বাচন, যেই নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। যেই নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। যেই নির্বাচন স্বচ্ছ হবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের আগে সবচেয়ে জরুরি বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিশালী করা এবং আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। কারণ আইনশৃঙ্খলা যদি ঠিক না থাকে, নির্বাচন ঠিক হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাউদার্ন ইউনিভার্সিটি-রেডিসন ব্লু’র মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষর
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় চিংড়ি ঘেরের দখলের বিরোধে দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ১