নারীর সুরক্ষায় সংবিধান

| শনিবার , ১৬ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে নারীদের সমতা ও অধিকার রক্ষায় অন্যতম চর্চিত বিষয় হলো সুরক্ষা৷ নারীর সুরক্ষা কারা দেবে? কেন দেব? নারীর সুরক্ষায় কি কি করণীয় এধরণের প্রশ্নের তালিকাও বেশ দীর্ঘ৷ তবে সমাজের একজন মানুষ হিসেবে, রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক মানুষই নিজের সুরক্ষা রক্ষা করতে পারেন। তবে আমাদের সমাজে এখনো নারীর সুরক্ষা আদায়ে বিভিন্ন আলাদা আইনের প্রয়োজন যেমন পড়ে তেমনই আইন মান্য করতেই প্রয়োজন হয় নতুন আইনের। তবুও সুরক্ষা নিশ্চিতই মোক্ষম কথা। কেননা বর্তমানে বেশিরভাগ নারীই নিজেকে পথেঘাটে সুরক্ষিত মনে করেন না।

নারীর সুরক্ষায় সংবিধান কি বলছে তা জানা খুবই জরুরি। সংবিধান রাষ্ট্রের দলিল। এ দলিলেই তার নাগরিকের সকল অধিকারের নীতি উল্লেখ থাকে।

বাংলাদেশের সংবিধানে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের নারী সুরক্ষা অঙ্গীকারের প্রতিফলন রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে– ‘রাষ্ট্র () একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালকবালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য; কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। ’

এছাড়া সংবিধানের ১৯ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে– ‘জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবেন। ’ ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকার এবং ৪০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যোগ্যতার ভিত্তিতে পেশা বাছাইয়ের অধিকার নারীপুরুষ উভয়ের রয়েছে। সংবিধানের ৬৫() অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে।

শুধু সংবিধান নয়; নারীর পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সর্বক্ষেত্রে সুরক্ষায় বিভিন্ন সময়ে তৈরি করা হয়েছে আইন ও নানারকম নীতিমালা। যার মধ্যে রয়েছে শিশুআইন ২০১৩, শিশুশ্রম নিরসন নীতিমালা ২০১০, জাতীয় শিশুনীতি ২০১১, শিক্ষানীতি ২০১০, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১, নারীনীতি ২০১১, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন ২০২০), বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন২০১৭, যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮, মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, এসিডসন্ত্রাস দমন আইন ২০০২, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ ইত্যাদি আইন করা হয়েছে।

বর্তমানে আইনের মাধ্যেম নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত অনেকটা সম্ভব হয়েছে তবে নীতিমালা থাকা কিংবা এর কিছু অংশ বাস্তবায়নই একমাত্র লক্ষ্য নয়। নারী পুরুষের সমতা আনতে সর্বোপরি বৈষম্যকে রুখে দিতে হবে। সংবিধানে একজন নাগরিকের সকল অধিকার নারীর ভোগ করার সুবিস্তৃত পথও তৈরি করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযেভাবে শুরু করতে পারেন ইয়োগা
পরবর্তী নিবন্ধআমরা হেরে যাইনি, আমাদের লড়াই চলছে-রাদা আকবর