বান্দরবানে বর্ষায় বিধস্ত লামা–সূয়ালক অভ্যন্তরীণ সড়কসহ গ্রামীণ সড়কগুলো সংস্কারের অভাবে মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে সড়কগুলো দিয়ে বাধ্য হয়েই চলাচল করছে হাজার হাজার জনসাধারণ। সড়কে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পার্বত্য জনপদের চাষিরা। সূত্র জানায়, জেলায় ২০০ কিলোমিটারের মত পাকা সড়ক ভাঙন ও ধসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, লামা–সূয়ালক সড়ক, হলুদিয়া–ভাগ্যকুল সড়ক, বাঘমারা–মঞ্জয়পাড়া সড়ক, বানিয়াছড়া–গজালিয়া সড়ক, ইয়ায়ছা–ত্রিদিবা সড়ক, রুমা–মাওয়াপাড়া সড়ক, রোয়াংছড়ি–ব্যঙছড়ি সড়ক, কালাঘাটা–তারাছা সড়ক, খানসামা–বাঘমারা আন্তাপাড়া সড়ক, রুমা–মুন্নমপাড়া সড়ক, বটতলী–গ্যালেঙ্গা সড়ক, চাকঢালা–আশারতলী সড়ক, নাইক্ষ্যংছড়ি–তুমব্রু সড়ক, কানাপাড়া সড়ক, তারাছা–গেজমনি পাড়া সড়ক, ক্যায়ামলং–চেমিরমুখ সড়ক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লামা–সূয়ালক সড়কের পাঁচটি স্থানে সড়কটি ভেঙে পড়েছে। খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি স্থানে সাইকেলও চালিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। রুমা–মাওয়াপাড়া সড়কের সাতটি এবং কালাঘাটা–তারাছা সড়কের ৫টি স্থানে, কানাপাড়া সড়কের দুটি স্থানে ভেঙেছে। তবে কয়েকটি স্থানে মারাত্মক ভাঙনে সড়কগুলো মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সফিক আহমেদ, থোয়াইচা মং অভিযোগ করে বলেন, লামা–সূয়ালকসহ গ্রামীণ সড়কগুলো কমবেশি সবখানেই ভেঙেছে। তবে লামা–সূয়ালক সড়কের দুটি স্থানে মারাত্মক ভাঙনে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কগুলো বর্ষার শুরুতেই ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সংস্কারের অভাবে সড়কগুলো জনসাধারণের জন্য মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দ্রুত সড়কগুলো সংস্কার করে জনভোগান্তি লাঘবের দাবি জানাচ্ছি।
টংকাবতী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সাব্বির, রিয়াং ম্রো, সানথাং ম্রো বলেন, ভাঙনের কারণে লামা–সূয়ালক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে আশপাশের পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্যগুলো দূর–দূরান্ত থেকে মাথায় করে নেওয়া লাগছে। এতে বাজারজাতকরণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে চাষিরা। সঠিক সময়ে কৃষিপণ্য বাজারে নিতে না পারায় পণ্যের গুণমান নষ্ট হওয়ায় আশানুরূপ দাম পাচ্ছে না। এতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বান্দরবান জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাসাউর জানান, বর্ষায় ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সাতটি উপজেলায় ২০’র অধিক অভ্যন্তরীণ গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে ২০০ কিলোমিটারের মত পাকা সড়ক ভাঙন ও ধসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সড়কগুলো দ্রুত মেরামতে ইতোমধ্যে বরাদ্দের বিপরীতে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সড়কগুলো সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।