বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর–খরণদ্বীপ ও চরণদ্বীপ ইউনিয়নবাসীর স্বপ্ন ছিল সৈয়দ খালের উপর একটি স্থায়ী সেতু হবে। ৪৩ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ৪ বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু হলেও আজও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। দিন গড়িয়ে যাচ্ছে, অথচ কাঠামো দাঁড়ায়নি পুরোপুরি। চলাচলের জন্য বিকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল একটি কাঠের সাঁকো। সেটিই ছিল পারাপারের একমাত্র ভরসা। কিন্তু সমপ্রতি বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল স্রোতে ভেঙে গেছে সেই কাঠের সাঁকোটিও। এখন দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী মো. কামার হোসেন বলেন, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষিপণ্য বহনকারী কৃষক, অসুস্থ রোগীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ বিপাকে পড়েছে। বিকল্প পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে, যার বেশিরভাগ অংশই ভাঙাচোরা। বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও কাঁদা সমস্যাকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। কাঠের যে সাঁকোটি ছিল সেটিও ভেঙে গেছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২০–২১ অর্থবছরে কালুরঘাট–ভান্ডালজুড়ি সড়কের কেরানী বাজার এলাকার কেরানী বাজার ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চার বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি প্রকল্পটি। প্রথমে ‘ACNT-JV’ নামক প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকায় কাজ দেওয়া হয়। তবে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে কাজ অসমাপ্ত রেখেই চলে যায় তারা। নতুন করে ২০২৪–২৫ অর্থবছরে মেসার্স নুর সিন্ডিকেট নামের প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় কাজের দায়িত্ব, যার ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। তবে জুন পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৪৫ শতাংশ।
শ্রীপুর–খরনদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. হাসান চৌধুরী বলেন, কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ায় ওই পাড়ের মানুষ খুবই দুর্ভোগে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বোয়ালখালী উপজেলার উপ–সহকারী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন বলেন, জোয়ারের পানিতে বিকল্প সেতু একপাশে ভেঙে যায়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় অতি দ্রুত মেরামত করা হবে।