ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় ব্যাপকভাবে নজরদারি চালাতে কেনা বিভিন্ন নজরদারি যন্ত্র ও এর ব্যবহার নিয়ে তদন্ত করবে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে। এদিন সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করেন প্রেস সচিব। খবর বিডিনিউজের।
প্রেস সচিব বলেন, কত টাকার নজরদারি যন্ত্র কেনা হয়েছে? কোথা থেকে কেনা হয়েছে? তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এই যন্ত্রগুলো কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে সেটাও দেখা হবে।
টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ও দেশের একটি ইংরেজি দৈনিকের বরাতে বিফ্রিংয়ে প্রেস সচিব বলেন, কেউ বলছেন ৩০০ মিলিয়ন ডলার, কেউ বলছেন ২০০ মিলিয়ন ডলারের নজরদারি যন্ত্র কেনা হয়েছিল। গত স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশের নাগরিকের অধিকার হননের জন্য এই অবৈধ নজরদারি যন্ত্রগুলো ব্যবহার করেছে। এর মাধ্যমে মানুষের অধিকার খর্ব করেছে সরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক কিছু ইসরায়েল থেকে কেনা হয়েছে। বিষয়গুলো তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে।
এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি দেশি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পুলিশ, র্যাব ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) যৌথভাবে এক হাজার ১৩৫ কোটি টাকার বেশি মূল্যের নজরদারি সরঞ্জাম কেনে। অন্যদিকে এনটিএমসি তৈরি করেছিল ইন্টিগ্রেটেড ল’ফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম (আইএলআইএস) নামে দেশব্যাপী বিস্তৃত এক পরিকাঠামো, যা সব নাগরিকের ইন্টারনেট ও টেলিকমিউনিকেশন ট্রাফিকের বিপুল তথ্য, অনায়াসেই নজরদারি, বিশ্লেষণ এবং সংরক্ষণ করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে গড়ে ওঠে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে তাৎক্ষণিক বা রিয়েল–টাইম কেন্দ্রীয় নজরদারি ব্যবস্থা।
প্রেস সচিব বলেন, পুলিশের জন্য যে মরণাস্ত্র কেনা হয়েছিল তা কীভাবে কেনা হয়েছে এবং কোন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়েছে সেটা নিয়েও তদন্ত হচ্ছে। তবে এই তদন্তের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
বৈঠকে সরকারি কেনাকাটা আইনে (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট) নতুন একটা পরিবর্তন আনার কথা তুলে ধরা হয়। শফিকুল আলম বলেন, যেটা খসড়া করা হয়েছে, সেটা সব মন্ত্রণালয়ের মাঝে বিতরণ করা হবে। দ্রুতই এর বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করা হবে।