আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনে এবারও ভোটকেন্দ্র বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যার অনুপাতে ভোটকেন্দ্র বাড়ে এবং কমে। এবার চট্টগ্রামে নতুন ভোটার বেড়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৫১ জন। গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২০২০টি। ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী এবারও চট্টগ্রামে বাড়তে পারে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা– এমনটা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের আগের বিদ্যমান ২০২০টি ভোট কেন্দ্র এবং ১৩ হাজার ৯৫৪টি ভোট কক্ষ পরিদর্শন করছেন জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এই ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ আজাদীকে বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২০২০টি। এবারও ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়বে কিংবা কমবে। আমরা এখন আগের ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করছি, সব ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখতে। এখনো ভোটকেন্দ্র বাড়েনি বা কমেনি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্দেশনা পেলে ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াব। এখন আগের তালিকাই ঠিক আছে।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রামে মেরামত যোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা চাওয়া হলে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ২৭৭টি মেরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে মোরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাউন্ডারি (সীমানা) প্রাচীর নেই এবং কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দরজা–জানালা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের ভোটকেন্দ্রে উপরের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, বাথরুম নেই, বিদ্যুতের লাইট নেই। ৩–৪টি ভবন জরাজীর্ণ, এসব ভবন নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। অনেক ভোটকেন্দ্রের যাতায়াত পথ চলাচল অনুপযোগী এবং অনেকগুলো মেরামত করতে হবে।
যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাউন্ডারি বা সীমানা প্রাচীর নেই, কিংবা ছোটখাট মেরামত/সংস্কারের প্রয়োজন আছে, সেসব প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে নিজস্ব অর্থায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ আজাদীকে বলেন, মেরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা চাওয়া হলে আমরা যেসব ভোটকেন্দ্র মেরামত করতে হবে তার একটি তালিকা কমিশনে পাঠিয়েছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামতের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ১৬ সংসদীয় আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৫৮টি। আর ভোটকক্ষের সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৮৫৪টি। একাদশ জাতীয় সংসদের তুলনায় দ্বাদশে ৬২টি ভোট কেন্দ্র বেড়েছিল। এবারও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যার অনুপাতে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সব কেনাকাটার প্রস্তুতি শেষ করেছে ইসি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।