দুবাই থেকে হোয়াটসঅ্যাপে তথ্য আসে, চট্টগ্রামে নামার পর পথে সুযোগ বুঝে ডাকাতি

চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার, লুণ্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল উদ্ধার

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৮ আগস্ট, ২০২৫ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

প্রবাসী যাত্রীরা কে কখন দেশে ফিরবেন; চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে কোন ফ্লাইটে কখন নামবেন হোয়াটসঅ্যাপে এসব তথ্য দুবাই থেকে এক সদস্যের মাধ্যমে চট্টগ্রামে সংগ্রহ করেন সৈয়দ মজিবুল হক। এরপর বাকি ডাকাত দলের সদস্যরা মাইক্রোবাসে করে প্রবাসীর সিএনজিকে অনুসরণ করে পথিমধ্যে সুযোগ বুঝে ডাকাতি চালাত। গত ২১ মে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক প্রবাসীর মালামাল লুটের ঘটনায় হালিশহর থানা থানায় দায়ের হওয়া মামলার সূত্র ধরে অভিযানে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ডাকাত দলের সদস্যদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনসের মিডিয়া সেন্টারে এই ব্যাপারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পশ্চিম বিভাগের উপকমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ২১ জুলাই সকালে দুবাই ফেরত মো. সামসু উদ্দিন বিমানবন্দর থেকে সিএনজি নিয়ে হালিশহর থানার সাগরপাড় লিংক রোড বারুনীঘাটস্থ ডগিরখাল ব্রিজের কাছে পৌঁছালে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস সিএনজি গাড়িটিকে চাপা দিয়ে থামিয়ে দেয়। মাইক্রোবাস থেকে ৩ জন ডাকাত অস্ত্রসহ নেমে দুবাই ফেরত সামসু উদ্দিনের কাছ থেকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার হাত ব্যাগ, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল, লাগেজ ও নগদ টাকা লুট করে পালায়। এসব মালামালের মূল্য আনুমানিক ১৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা। পরে ২৩ জুলাই হালিশহর থানায় তিনি একটি মামলা করেন।

ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে হালিশহর থানায় মামলা নেয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বহদ্দারহাট এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ি জব্দ করে। প্রথমেই মাইক্রোবাসের নম্বর দিয়ে মালিকানা যাচাই করে গাড়িটি নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে জব্দ করা হয়। এরপর গত ২৩ জুলাই নগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. মনির উদ্দিন (৩৩), সৈয়দ মজিবুল হক (৪৭), মো. আলীম হাওলাদার জাবেদ (৩২), মো. হাসান (৩০), মো. রুবেল (২৭), মো. সুমন (২৬) ও মো. ইমরান মাহামুদুল প্রকাশ ইমন (২৫)

উপকমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া জানান, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে লুণ্ঠিত মালামালের বিষয়ে একে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছিল। গত বুধবার আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা জানায়, মামলার ঘটনার পর আসামি আলীম হাওলাদার জাবেদ, মো. হাসান ও পলাতক আসামি সাদ্দাম ও রাসেল চান্দগাঁও থানাধীন পাঠানিয়া গোদা এলাকার একটি দোকানে ছিনতাইকৃত স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে। পরে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ ভরি ১১ আনা স্বর্ণ এবং দুটি দামি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও সে সময় পলাতক আসামি ইমন ও সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় এখনো পলাতক রয়েছে চালক সাদ্দাম ও রাসেল। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পুলিশের ভাষ্য, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে আগেও অস্ত্র ও নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষার্থীদের পিতা-মাতার স্বপ্ন পূরণে সচেষ্ট হতে হবে : শিক্ষা উপদেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধকার্যকর হল বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশের ওপর আরোপ করা নতুন মার্কিন শুল্ক