বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হেরে যাওয়া পাকিস্তান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নিয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ সময় সকালে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ ২–১ ব্যবধানে জিতে নিল পাকিস্তান। এক ম্যাচের একটি লড়াইসহ ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে এই সংস্করণে আট দ্বিপাক্ষিক সিরিজের প্রতিটিই জিতে নিল পাকিস্তান। ফ্লোরিডায় আগের দুই ম্যাচের চেয়ে শেষ ম্যাচের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ছিল একটু ভালো। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান ২০ ওভারে তোলে ৪ উইকেটে ১৮৯ রান। ১৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলের ভিত গড়ে দেন সাহিবজাদা ও সাইম। ৫ ছক্কায় ৫৩ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন সাহিবজাদা। সাইমের ব্যাট থেকে আসে ৪৯ বলে ৬৬। রান তাড়ায় আলিক আথানেজ ও শেরফেন রাদারফোর্ডের ফিফটির পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ থমকে যায় ১৭৬ রানে। আগের দিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ধুঁকেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভিন্ন উইকেটে পরদিন একই পথ বেছে নেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা। এবার দলকে দারুণ শুরু এনে দেন সাহিবজাদা ও সাইম। পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তোলে পাকিস্তান। সাহিবজাদার রান তখন ২০ বলে ৩১ আর সাইমের ১৬ বলে ১৬। সাহিবজাদা ৩৪ বলে পৌঁছে যান ফিফটিতে। পরে সাইম আইয়ুব ফিফটি করেন ৩৭ বলে।
শামার জোসেফের লো ফুল টসে ক্যাচ দিয়ে সাহিবজাদার বিদায়ে ভাঙে শতরানের জুটি। পরে হোল্ডারের লো ফুল টসেই ফেরেন সাইম। ইনজুরির কারণে ফখর জামান ছিলেন না দলে । তিনে নেমে হাসান নাওয়াজ দুই ছক্কায় ৭ বলে করেন ১৫ রান। শেষ ওভারে ১৯ রান তুলে নিলে পাকিস্তানের ইনিংস গিয়ে দাড়ায় ১৮৯ রানে। খুশদিল শাহ ৬ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন। ফাহিম আশরাফ ৩ বলে করেন ১০ রান। ১৯০ রান তাড়া করতে নেমে ক্যারিবিয়ানদের শুরুটা ছিল দারুণ আগ্রাসী। হাসান আলির প্রথম ওভারেই তিনটি চার মারেন তরুণ জুয়েল অ্যান্ড্রু। পরের ওভারে মোহাম্মাদ নাওয়াজকে দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকান আলিক আথানেজ। আগের দিন চার ওভারে ১৩ রান দেওয়া নাওয়াজ এ দিন নিজের প্রথম ওভারেই দেন ১৭ রান। পরে অবশ্য একটু চেপে ধরে পাকিস্তানের বোলাররা। একাদশে ফেরা হারিস রউফ বিদায় করেন অ্যান্ড্রুকে । ১৫ বলে ২৪ রান করেন তিনি। অধিনায়ক শেই হোপ তিনে নেমে ৯ বলে ৭ করেন ৭ রান। আথানেজ ও রাদারফোর্ড অবশ্য জাগিয়ে তোলেন দলের সম্ভাবনা। তবে দুজনেরই কেউই দলকে নিতে পারেননি লক্ষ্যের কাছে। প্রথম টি–টোয়েন্টি ফিফটিতে ৪০ বলে ৬০ করে সাইমকে স্লগ করার চেষ্টায় ফেরেন আথানেজ। রাদারফোর্ডের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ৫১ রান। মাঝে দলকে একটু পেছনে টেনে নেন রোস্টন চেইস। দুটি বাউন্ডারি মারলেও সময়ের দাবি মেটাতে পারছিলেন না তিনি। সপ্তদশ ওভার শেষে তাকে তুলে নেওয়া হয়। তখন তার রান ১২ বলে ১৫। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে রিটায়ার্ড আউটের দ্বাদশ নজির এটি। তবে পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর ক্রিকেটাদের মধ্যে তিনিই প্রথম। শেষ তিন ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন পড়ে ৪১ রানের। ক্রিজে যান হোল্ডার। তার জন্যই সুফিয়ান মুকিমের একটি ওভার রেখে দিয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
সিরিজ জুড়ে দুর্দান্ত বল করা বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার অসাধারণ এক ফ্লিপারে দ্বিতীয় বলেই বোল্ড করে দেন হোল্ডারকে। ওভারে রান দেন স্রেফ তিন। ম্যাচ কার্যত ওখানেই শেষ। হাসান আলির শেষ ওভারে গুডাকেশ মোটির একটি চার ও ছক্কায় একটু কমে ব্যবধান। তবে ম্যাচ আর জমে ওঠেনি। দুই দলের ২৩ টি–টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের জয় এখন ১৭টি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্রেফ ৩টি। দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা সাহিবজাদা। দারুণ বোলিংয়ে সিরিজে সাত উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা পাকিস্তানের নাওয়াজ।