নতুন সংবিধান ও ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ এবং জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচারের প্রতিশ্রুতি রেখে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করেছে তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপি। অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপ্তিতে গতকাল রোববার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘোষণাপত্র পড়ে শোনান নতুন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, নতুন বাস্তবতায় সরকার পতনের সেই এক দফা এবার ২৪ দফায় রূপান্তরিত হয়েছে।
এক বছর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শেষ দিকে এসে এই শহীদ মিনার থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। বর্ষপূর্তির এ সময়ে ওই অভ্যুত্থানের সামনের সারিতে থাকা নেতাদের দল এনসিপি নতুন বাংলাদেশ গড়তে ২৪ দফার এ ইশতেহার প্রকাশ করল। এতে প্রথম অঙ্গীকার হিসেবে গণপরিষদের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিলোপ করে একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জনকল্যাণমুখী সেকেন্ড রিপাবলিক গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
ইশতেহার ঘোষণার সময় নাহিদ জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করার কথাও তুলে ধরেন। ইশতেহারে জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি আন্দোলন দমানোর চেষ্টাকালে সংঘটিত সহিংসতার বিচার করার অঙ্গীকারও তুলে ধরেন এনসিপির আহ্বায়ক।
অভ্যুত্থানের পর গড়ে ওঠা দলটি ইশতেহারে আরও যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার, সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন, জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলা, গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য ও জাতিগঠনে শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করা।
২৪ দফা : নতুন বাংলাদেশ এনসিপির ঘোষণা করা ২৪ দফা ইশতেহার হলো ১. নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক, ২. জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার, ৩. গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, ৪. ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার, ৫. সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন, ৬. জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ৭. গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার, ৮. স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ, ৯. সার্বজনীন স্বাস্থ্য, ১০. জাতিগঠনে শিক্ষানীতি, ১১. গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব, ১২. ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্তার মর্যাদা, ১৩. নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন, ১৪. মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি, ১৫. তারুণ্য ও কর্মসংস্থান, ১৬. বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি, ১৭. টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব, ১৮. শ্রমিক–কৃষকের অধিকার, ১৯. জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ২০. নগরায়ন, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা, ২১. জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী–সমুদ্র রক্ষা, ২২. প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার, ২৩. বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি এবং ২৪. জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।