মহেশখালীতে ১০ বছর আগে মৃত ব্যক্তি হলেন মামলার আসামি!

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ৪ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:০১ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার বড়মহেশখালী ফকিরাঘোনা এলাকার মাহমুদুল করিম ১০ বছর পূর্বে মালয়েশিয়ায় কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মারা যান। কিন্তু সমপ্রতি থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে! এই ঘটনায় থানা পুলিশের দায়িত্বে গাফিলতি নিয়ে সমালোচনা চলছে সর্বত্র। তবে মাহমুদুল করিমের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, দায়ের করা মামলাটিই ‘ভুয়া’। অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে পুলিশ কাল্পনিক মামলাটি রুজু করেছে। এর জন্য তারা থানার ওসিকে অভিযুক্ত করছেন। মৃত মাহমুদুল করিমের ভাই এনামুল করিম জানান, তার পরিবারের মালিকানাধীন উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের অমাবশ্যাখালী এলাকার একটি চিংড়ি ঘের জবরদখলের জন্য গত ১৩ জুলাই গভীর রাতে সশস্ত্র হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এই ঘটনায় ২১ জুলাই এনামুল করিম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এর চার দিন পর নুরুল কবির নামে প্রতিপক্ষের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এনামুল করিম পক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেন।

মাহমুদুল করিমের ভাই এনামুল করিম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি সম্পূর্ণ ‘সাজানো’। আশ্চর্য্যজনকভাবে এই ১০ বছর আগে মালয়েশিয়া নিহত আমার ভাই মাহমুদুল করিমকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। থানা পুলিশ কোনো তদন্ত ছাড়াই সাজানো ঘটনা দেখিয়ে মামলাটি রুজু করেছেতা মৃত মানুষকে আসামি করায় প্রতীয়মান হয়। থানার ওসি মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে এই সাজানো মামলাটি রুজু করেছেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ এনায়েত কবীর বলেন, ‘এনামুল করিম বাদী হয়ে প্রথমে যে চাঁদাবাজি মামলা রুজু করেছেন তা সর্ম্পকে আমি অবগত। পরবর্তীতে মামলার বাদী এনামুল করিমসহ যাদের বিরুদ্ধে পাল্টা চাঁদাবাজি মামলা রুজু হয়েছে এই মামলা সর্ম্পকে আমি জানি না। তবে ওসি সাহেব দুই মামলাই আমাকে তদন্তের জন্য দিয়েছেন। আমি তদন্ত করে যা পাই তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবো। ’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘দ্রুত মামলা রুজু করতে গিয়ে কখনও কখনও এমন ভুল হতে পারে। তবে এজাহারে যদি কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি বা মৃত ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত হয়, তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলে চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হবে।’ মামলা রুজু জন্য মোটা অংকের উৎকোচ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন ওসি।

এই বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফি) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মহেশখালীতে দখলবাজির মামলায় অতিরিক্ত আসামির নাম অন্তর্ভুক্তির প্রবণতা রয়েছে। তদন্তে কেউ নিরীহ বা মৃত প্রমাণিত হলে তাকে চার্জশিটে বাদ দেওয়া হবে। আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধদুই কারণে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম