বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজারে সাগর উত্তাল রয়েছে। গত দুদিন ধরে কক্সবাজারে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে জেলার উপকূলীয় অঞ্চল। সাগর উত্তাল থাকায় ইতোমধ্যে গভীর সাগরে থাকা সকল মাছ ধরার ট্রলার কূলে ফিরে এসেছে।
জানা যায়, নিম্নচাপের প্রভাব এবং অমাবস্যার কারণে সাগরের জোয়ারের পানি ২–৩ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে কুতুবদিয়া ও মহেশখালী দ্বীপসহ উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের আনিসের ডেইল, তাবলর চর ও কাহার পাড়া, সাইট পাড়া ও বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের অর্ধশত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পুকুর জলাশয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। অপরদিকে মহেশখালীর ধলঘাটা ও মাতারবাড়ির নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথোয়াই প্রু মারমা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ভাঙনের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু, যেসব অংশ এখনো মেরামত সম্ভব হয়নি সেসব পয়েন্ট দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। প্লাবিত এলাকার মানুষগুলোকে জন্য আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কিছু কিছু এলাকায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। মেরিন ড্রাইভ রোডের টেকনাফ অংশের কয়েকটি পয়েন্টে আবারো ভাঙনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীসহ কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বাড়ি–ঘর প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব রকম প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন তিনি।
কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের গোসলে সতর্কতা জারি এবং হাঁটু পানির নিচে নামতে নিষেধ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফ গার্ড কর্মীরা। এর মধ্যে সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত তিন ধরে এই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সবচেয়ে বেশি ভাঙন সৃষ্টি হয়। ভাঙনে বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি বিলীন হয়ে উপড়ে গেছে শত শত ঝাউগাছ।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপটি উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। নিম্নচাপের কারণে আগামী সোমবার পর্যন্ত দমকা হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় ১–৩ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তাই, এসব এলাকাকে স্থানীয় ৩ নাম্বার সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।